মৃত্যুর মুখ থেকে ফেরা ইমন যা বললেন
চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসে দুমড়েমুচড়ে ১১ জন যাত্রী নিহত হন। ঘটনাস্থলে তারা মারা গেলেও বেঁচে ফিরেছেন ৬ জন। সেই মাইক্রোবাসের পিছনের সিটে বসা ছিলেন শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজে উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র জুনাইদ কাউসার ইমন।
সন্ধ্যায় ইমন বলেন, ঝর্ণা থেকে আসার সময় সড়কের রেল ক্রসিংয়ের সিগন্যাল বা প্রতিবন্ধক ছিল না। রেলের গেটম্যানের রুমটা তালাবদ্ধ ছিলো। কোন ধরনের গেটম্যান ছিল না।
দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত বৃষ্টি পড়ছিল চারদিকে দোকান ছিল, যার কারণে চালক রেললাইনের দিকে নজর দেয়নি। রেল আসছে সেটা দেখা যায়নি, আমি মাইক্রোবাসের শেষের সিটে বসে ছিলাম। রেললাইনে উঠার সঙ্গে সঙ্গে রেল মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিয়ে সামনে নিয়ে যায়। আমি মাইক্রোবাসের কাচ ভেঙে বের হয়ে যাই। স্থানীয় বাসিন্দা ও পরে জাতীয় জরুরি সেবায় কল দিলে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস পুলিশ আসেন।’
আরও পড়ুন: নিহত ৯ জনের পরিচয় জানা গেছে
মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফেরা ইমন আরও বলেন, ‘আমরা আমান বাজার থেকে সকাল ৮টার দিকে বের হয়েছি। আজান দেওয়ার সময় ঝরনায় ছিলাম। সেখান থেকে আসার সময় সোয়া ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আমার দুই বন্ধু ও দুই বড় ভাই ছিলেন গাড়িতে। চারজন স্যার ছিলেন। বাকিরা আমার ছোট ভাই। আমি নিজেও কয়েকজনকে উদ্ধার করে গাড়িতে তুলে দিয়েছি।’
জুনায়েদ জানান, যারা নিহত হয়েছেন তারা মাইক্রোবাসের সামনে ও মাঝের দিকে বসা ছিলেন।
এদিকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে ভিন্ন কথা। দুর্ঘটনার পরপর রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেছিলেন, ওই লেভেল ক্রসিংয়ের সিগন্যাল বারটি ফেলা ছিল। চালক তা উঠিয়ে গাড়ি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এ কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
তিনি বলেন, ‘খৈয়াছড়া এলাকায় রেলওয়ের ওপর দিয়ে একটি সড়ক পথ গেছে। সেখানে রেলওয়ের নিযুক্ত গেটম্যানও আছে। দুর্ঘটনার পরপর গেটকিপারের সঙ্গে কথা বলেছি। গেটকিপার আমাকে জানিয়েছেন, ট্রেন আসার আগেই গেট ফেলা ছিল। কিন্তু মাইক্রোবাসের চালক গেটবারটি জোর করে তুলে রেললাইনে প্রবেশ করেন। এরপর মহানগর প্রভাতী ট্রেন মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি।’