১৭ জুলাই ২০২২, ১৭:৪২

ট্রাকচাপায় জন্ম নেওয়া শিশুটিকে লালন-পালনে আগ্রহী দাদা-দাদি

ট্রাকচাপায় জন্ম নেওয়া শিশু  © সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় মায়ের মৃত্যুর আগ মুহূর্তে জন্ম নেওয়া শিশুটির চিকিৎসাসহ সব দায়িত্বভার নিয়েছে জেলা প্রশাসন। অনেকেই নবজাতকটির দায়িত্ব নিতে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। তবে শিশুটির বৃদ্ধ দাদা-দাদির ইচ্ছে, মৃত ছেলের সদ্যোজাত সন্তানকে নিজেদের কাছে রেখেই লালন পালন করবেন তারা।

শনিবার (১৬ জুলাই) ময়মনসিংহের ত্রিশালের পৌর এলাকায় ট্রাকচাপায় একই পরিবারের তিন সদস্য নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে এক নারী সদস্য রত্না বেগম (২৬) অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ট্রাকচাপায় তার গর্ভের সন্তান বের হয়ে আসে।

নবজাতকের দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি প্রতিবন্ধী মানুষ। ছয় বছর ধরে কাজ করতে পারি না। আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করতাম। এখন মাসে ৪৫০ টাকা সরকারি ভাতা পাই। তবে নিজের কাছেই রেখে মা-বাবা হারানো নাতনিকে আমরা লালন-পালন করতে চাই। নবজাতককে নিজেদের কাছে রেখেই বড় করতে ইচ্ছুক বৃদ্ধ দাদা-দাদি। 

ওইদিন দুপুরে পৌর এলাকার দড়িরামপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পার হওয়ার সময় দুর্ঘটনায় জন্ম হয় শিশুটির। ওই দুর্ঘটনায় শিশুটির বাবা জাহাঙ্গীর আলম (৩৫), মা রত্না বেগম এবং আড়াই বছর বয়সী বোন জান্নাত আরার মৃত্যু হয়। সড়ক দুর্ঘটনায় ছেলে, ছেলের স্ত্রী ও এক নাতনিকে হারানোর পর থেকেই নবজাতকের দাদা মোস্তাফিজুর রহমান ও দাদি সুফিয়া বেগম শোকবিহ্বল।

স্থানীয়রা জানায়, ত্রিশাল উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের রায়মনি গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর; তার স্ত্রী রত্না আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে বাড়ি থেকে বের হলে সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার সময় ট্রাকের চাপায় রত্নার গর্ভে থাকা সন্তান বের হয়ে আসে। নবজাতকটি কন্যাশিশু। তাকে উদ্ধার করে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক নবজাতককে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে শিশুটি শঙ্কামুক্ত।

আরও পড়ুন: মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেয়া সেই শিশুর দায়িত্ব নিলেন জেলা প্রশাসক

বর্তমানে নবজাতকটি ময়মনসিংহ নগরের চরপাড়া এলাকার লাবীব হাসপাতালের চিকিৎসক কামরুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন। লাবীব হাসপাতালের মালিক মো. শাহ জাহান জানান, নবজাতকটির ডান হাতে প্লাস্টার করা হয়েছে। তাকে অন্তত দুই সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকতে হবে। তিনিই চিকিৎসার সব দায়িত্ব পালন করবেন।