কুড়ানো গোশত বেচে চাল কিনবেন তিনি
ফেনীর রেলস্টেশনের পাশে ঈদের দিনে মাংস বিক্রি ও কেনার জন্য জমজমাট বাজার বসে। যারা কোরবানি দিতে পারেন না তারা কম দামে এই হাট থেকে মাংস কিনে নেন। স্থানীয় জয়নাল আবেদিন এ হাটের একজন বিক্রেতা। তবে হাটে বিক্রি করতে আনা এ গোশত তার নিজের নয়, ঈদের দিন কুড়িয়ে পেয়েছেন এ গোশত। দরিদ্র জয়নাল জানিয়েছেন তিনি গোশত বিক্রি করে চাল কিনবেন।
রবিবার (১০ জুলাই) ঈদুল আজহার সকাল থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাংস কুড়ানো শুরু করেছিলেন তিনি। এভাবে জয়নাল প্রায় ৭ কেজি মাংস সংগ্রহ করেছেন। সংগৃহীত মাংস থেকে ২ কেজি ঘরে রেখে বাকি ৫ কেজি ফেনী শহরের রেল স্টেশন এলাকায় নিয়ে এসেছেন বিক্রি করতে।
জয়নাল জানান, ঘরে চাল-ডাল নেই। তাই মাংস বিক্রি করেই এসব কিনে বাড়ি ফিরবেন। রেলস্টেশনের পাশে একটি কলোনিতে গত ৮ বছর ধরে বসবাস করছেন তিনি।
শুধু জয়নাল নন, সরেজমিনে দেখা গেছে- নিম্ন আয়ের বেশ কিছু মানুষ ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিভিন্ন এলাকা থেকে মাংস কুড়িয়ে এনে শহরের বড় মসজিদের সামনে, রেলগেইট কিংবা মিজান রোড এলাকায় তা বিক্রি করছেন।
স্থানীয় দুলাল তালুকদার জানান, ছিন্নমূল ও দরিদ্র লোকজন ফেনীর বিভিন্ন স্থান থেকে কোরবানির মাংস সংগ্রহ করে তা এই বাজারে নিয়ে এসেছেন। যারা কোরবানি দিতে পারেনি তারা এবং কিছু হোটেল ব্যবসায়ী এই মাংস কিনে নিচ্ছেন।
ফেনী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গা কোরবানির গোশত কেনা-বেচা চলে। রাজধানীর গুলশান গুদারাঘাট এলাকায় ভাসমান কোরবানির মাংসের হাটে স্বল্প মূল্যে মাংস বিক্রি করতে দেখা গেছে।
ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে তাদের অনেকেই ময়মনসিংহ বা নেত্রকোনা থেকে এসেছেন মাংস সংগ্রহ করতে। আবার অনেকে রাজধানীতে থাকেন। সারা দিন মাংস সংগ্রহ করার পর নিজেদের প্রয়োজন মতো রেখে বাকি মাংস এখানে বিক্রি করছেন।
ময়মনসিংহের বাসিন্দা মো. জুলহাস করোনার বছর বাদে প্রায় প্রতিবারই কোরবানির ঈদের সময় রাজধানীতে আসেন মাংস সংগ্রহ করতে। এলাকায় তিনি দিনমজুরি করে সংসার চালান। আজ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ১৪ কেজি কোরবানির মাংস সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে চার কেজি পরিবারের জন্য রেখে বাকি ১০ কেজি ৩০০ টাকা দরে গুদারাঘাট ভাসমান কোরবানি মাংসের হাটে বিক্রি করেছেন।