মোটরসাইকেলে ঘুরতে গিয়ে ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল ৩ স্কুলছাত্রের
এক স্কুল ছেড়ে মাসখানেক আগে আরেক স্কুলে ভর্তি হলেও পুরাতন বন্ধুদের ভুলে যায়নি ফাহিম রহমান অমি। তাই সদ্য সাবেক স্কুলের দুই সহপাঠী বন্ধু আজিম আহমদ ইয়ামিন ও জাসিম আহমদকে নিয়ে ফাহিম বাবার মোটরসাইকেলে ঘুরতে বেড়িয়েছিল। নগরী থেকে জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুরের উদ্দেশে রওনা হলেও বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাক মুহূর্তে সব স্তব্ধ করে দিয়েছে।
সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে জৈন্তাপুরের চিকনাগুলে গ্যাস ফিল্ডের ৩ নম্বর গেটের সামনে দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া তিন বন্ধুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় তিন স্কুলছাত্রের পরিবার, বন্ধু-স্বজন, শিক্ষকসহ সবার মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রোববার বিকেল ৩টায় দুর্ঘটনাস্থলে আজিম, হাসপাতালে নেওয়ার পথে ফাহিম ও হাসপাতালে ভর্তির পর জামিসের মৃত্যু হয়।
স্কলার্সহোম স্কুল অ্যান্ড কলেজের মেজরটিলা ক্যাম্পাসের দশম শ্রেণির ছাত্র ফাহিম মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য সুবেদুর রহমান মুন্নার একমাত্র ছেলে। আজিম পীরেরবাজারের হাতুড়া গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে ও জাসিম একই এলাকার আটগ্রাম শেওয়া গ্রামের আব্দুল আহাদের ছেলে। আজিম ও জাসিম জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র।
যুবলীগ নেতা সুবেদুর রহমান মুন্নার বন্ধু যুবলীগ নেতা সোহেল আহমদ জানান, রোববার দুপুরের দিকে বাবার কাছ থেকে মোটরসাইকেল চেয়ে আরও দুই বন্ধুকে নিয়ে বেড়াতে বেরিয়েছিল ফাহিম। একমাত্র ছেলের আবদার রাখতে গিয়ে তার মৃত্যু কোনোভাবে মেনে নিতে পারছেন না মুন্না।
স্কুলপড়ুয়া তিন বন্ধুর মৃত্যুর খবর শুনে মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বিজিত চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদসহ যুবলীগের নেতাকর্মীরা ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভিড় করেন। এ সময় ওসমানী হাসপাতালে নিহতদের পরিবারের সদস্য, সহপাঠী ও স্বজনদের কান্নায় হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
সিলেট জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফুর রহমান জানান, সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে ট্রাক ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিন স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার পর ট্রাকটি জব্দ করা হলেও চালক ও তার সহকারী পালিয়ে যান। এদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এখন পুরো বিষয়টি হাইওয়ে পুলিশ দেখছে।