সাবেক উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিকের ডিগ্রি নিয়ে প্রশ্ন সংসদ সদস্যের
জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের ডিগ্রি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি অভিযোগ করেছেন— আরেফিন সিদ্দিকের ডক্টরেট ডিগ্রিই নেই। তার ঢাবির উপাচার্য পদে নিয়োগ পাওয়াকে ‘রাজনৈতিক বিবেচনাপ্রসূত’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
তার এমন বক্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী দিনে বক্তব্যে কাজী ফিরোজ রশীদ এ কথা বলেন। শিক্ষকদের হত্যা, লাঞ্ছনার শিকার হওয়ার প্রতিবাদও জানান। এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য যোগ্যতার বদলে রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগকে দায়ী করেন।
আরেফিন সিদ্দিকের প্রসঙ্গে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, ‘ডাক্তার-প্রকৌশলী বানাচ্ছি, কিন্তু মানুষ বানাচ্ছি কতগুলো?’ উনিও তো দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। ঢাবির ভিসি ছিলেন, কোনো গবেষণা ছিল না। ডক্টরেট ডিগ্রি নেই, রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পেয়েছেন। যখন যে দল ক্ষমতায় আসে, সেই দলের শিক্ষকদের পদোন্নতি হবে। তাদের ছত্রচ্ছায়ায় ছাত্রনেতারা মাস্তান হয়ে যায়।
আরো পড়ুন: ঢাবি মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণায় গুরুত্ব দিচ্ছে: ভিসি
এ বিষয়ে অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আমি দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছি, উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেছি। এর মূল্যায়ন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও দেশবাসী অবশ্যই করবে। আমি উপাচার্য থাকার সময় ওই সংসদ সদস্য কিছু অনুরোধ নিয়ে এসেছিলেন, যা রাখতে পারিনি।
আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেতে আমার অফিসে অনুরোধ নিয়ে এসেছিলেন। তাকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। সে বিষয়ে হয়তো তার ক্ষোভ কাজ করতে পারে।
আরেফিন সিদ্দিকের ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে ফিরোজ রশীদের অভিযোগটিরও সত্যতা পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন তিনি। পরে ১৯৮৬ সালে ভারতের মহীশুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয় ও কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহম্মদ বলেন, একজন সংসদ সদস্য হিসেবে কাজী ফিরোজ রশীদ অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক স্যারের বিষয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
তিনি বলেন, আরেফিন স্যার ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়েছেন। অনেক গবেষণা কাজও রয়েছে। এ ধরনের মন্তব্য করার আগে তথ্য-উপাত্ত সঠিক কি না, তা যাচাই করা উচিত।