উদ্বোধনের দিন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকছে না পদ্মাসেতু: সেতু সচিব
আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন হতে যাচ্ছে বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু। সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে সেদিন এটি সর্বসাধারণের জন্য থাকছে না বলে জানিয়েছেন সেতু বিভাগের সচিব মঞ্জুর হোসেন।
বুধবার (৮ জুন) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সেতু বিভাগ আয়োজিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ২৫ তারিখ পদ্মা সেতু পার হওয়ার জন্য অনেকের মধ্যে আগ্রহ আছে। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন শেষে চলে আসার পর যেকোনো সময় প্রজ্ঞাপন দিয়ে বা গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হবে কখন পদ্মা সেতু সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। সেটা হতে পারে পরদিন ভোর ৬টা বা ওই দিনই কোনো সময় থেকে।
তিনি আরো জানান, পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে দুটি অনুষ্ঠান হবে। মাওয়া প্রান্তে হবে সুধী সমাবেশ। যেখানে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী কথা বলবেন। তারপর মাওয়া প্রান্তে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল উদ্বোধন করবেন। সবকিছু ঠিক থাকলে পদ্মা সেতু পার হয়ে বেলা ১১টায় তিনি জাজিরা প্রান্তের সমাবেশে যোগ দেবেন। ওপাশেও একটি উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল থাকবে, সেটিও উদ্বোধন করবেন। অনুষ্ঠানগুলো একসঙ্গে আটটি বিভাগে, ৬৪ জেলায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, উদ্বোধনের আগের দিন (২৪ জুন) পদ্মা সেতু কিছুক্ষণের জন্য খুলে দেওয়া হতে পারে। তখন হয়তো কিছু সময়ের জন্য মানুষ পায়ে হেঁটে পদ্মা সেতুতে যাতায়াতের সুযোগ পাবেন। তবে এ সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘২৫ তারিখ উদ্বোধনের দিনে পদ্মা সেতু দিয়ে কোনো গাড়ি চলবে না। ২৬ তারিখ সকাল থেকে (সময় জানিয়ে দেওয়া হবে) টোল দিয়ে পদ্মা সেতু পার হতে হবে। আগের দিন (২৪ জুন) হয়তো কিছু সময়ের জন্য খোলাও হতে পারে। সেটা এখনো নিশ্চিত নয়। সেদিন পায়ে হেঁটে হয়তো আপনারা যাতায়াত করতে পারবেন। এ রকম একটা সময়সীমা হয়তো দেওয়া হবে। চিন্তাভাবনা আছে। দেখা যাক।’
সেতুমন্ত্রী মনে করেন, অর্থায়ন থেকে সরে গিয়ে বিশ্ব ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিবারকে যে অপমান করেছিল, পদ্মা সেতু সে অপমানের প্রতিশোধ। তিনি বলেন, বিশ্ব ব্যাংক আমাদেরকে দুর্নীতি, চুরির অপবাদ দিয়ে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে গিয়েছিল। বিশ্বব্যাংক যে অপমান করেছে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, জয়-পুতুল, ববি কাউকে বাদ দেয় নাই। গোটা বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে অপমান করেছে। অপবাদ দিয়েছে। তারা আমাদের বীরত্বকে আমাদের সম্মানকে ক্ষুণ্ন করেছে, আমাদের ভাবমূর্তির ওপর আঘাত হেনেছে। তাই আমি বলব এই পদ্মা সেতু আমাদের সামর্থ্যের সক্ষমতার সেতু নয়। এই সেতু আমাদের অপমানের প্রতিশোধ।
সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। এতে অংশ নেন পদ্মা সেতুর ওপারে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা ও সংসদ সদস্যরা। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ‘সাবধানে চলাফেরা করার নির্দেশনা দিয়েছেন’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষ্যে দক্ষিণাঞ্চলের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনার কথা জানান দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।