০৭ জুন ২০২২, ১৮:৩৪

দেশের জন্য জীবন গেল রনির, টাকা দিয়ে লাশ নিতে হলো পরিবারকে!

গার্ড অব অনার ও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ  © ফাইল ছবি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত শেরপুরের ফায়ার ফাইটার রমজানুল ইসলাম রনির লাশ নিতে হাসপাতালে টাকা দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভাই তরিকুল ইসলাম রকি (২৫)।  তিনি মঙ্গলবার (৭ জুন) সকালে তার মরদেহ শেরপুরের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে এলে স্থানীয় সাংবাদিকদের এ অভিযোগ করেন।

রকি বলেন, আমার ভাই রনি দেশের জন্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মারা গেলেন। অথচ হাসপাতালে আমার মাসহ আমাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। কেউ আমাদের সহযোগিতা করেনি। বরং অজ্ঞাতনামা থেকে সঠিক নাম-পরিচয়ে তালিকাবদ্ধ করতে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টাকা চেয়েছে।

তার অভিযোগ, সর্বশেষ ময়নাতদন্ত শেষ হওয়ার পর ডোমকেও টাকা দিতে হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ বের করতে দেরি করেছে তারা। মরদেহ প্যাঁচাতে পলিথিনও কিনতে হয়েছে আমাদের। এ জন্য মরদেহ হাসপাতাল থেকে বের করতে আমাদের সন্ধ্যা হয়েছে।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সাংবাদিকদের বলেন, এমন কোনো অভিযোগ এখনো কেউ করেনি। লাশ ঘরের দায়িত্বে যারা থাকে, তারা দিনরাত কাজ করছে। অনেক চাপের মধ্যে তাদের কাজ করতে হয়েছে।

এর আগে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত রনির লাশবাহী গাড়ি মঙ্গলবার ভোরে শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের বালুঘাটা গ্রামে প্রবেশ করে। মরদেহ পৌঁছার পর থেকেই স্থানীয়রা ভিড় করে তার বাড়িতে।

এরপর সকাল ৯টায় শেরপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তারা তাকে গার্ড অব অনার ও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। সকাল ১০টায় ফায়ার ফাইটার রনির রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজার দায়িত্বে ছিলেন রনির চাচা মুফতি নজরুল ইসলাম আজাদী। জানাজায় রনির আত্মীয়-স্বজনসহ সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেন। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

রমজানুল ইসলাম রনি দেড় বছর আগে ফায়ার সার্ভিসে যোগ দেন। তিন মাস আগে তিনি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে বদলি হন। আট মাস আগে বিয়ে করে স্ত্রী রুপাকে নিয়ে সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কাছেই বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন।