০৫ জুন ২০২২, ০৯:২০

আমি মারা যাচ্ছি বাবা, আমাকে মাফ করে দিও

নিহতের বাবা ফরিদুল ইসলাম   © সংগৃহীত

তিন মাস আগে বিএম কনটেইনার ডিপোতে চাকরিতে ঢোকে মমিনুল হক। শনিবার রাতে আগুন লাগার পরপরই সাড়ে নয়টা দশটার দিকে ছেলের সঙ্গে আমার প্রথম কথা হয়। প্রথমবার ছেলে ডিপোতে আগুন লাগার সংবাদ জানায়। তখন তাকে দূরে থাকতে বলেছিলাম।

‘শুরুতে ৯টা সাড়ে ৯টার দিকে ফোন করেছিল। তখন বলছে- বাবা, এখানে আগুন লাগছে। দেড় ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বলতেছে। আমি বলছি, বাবা, দূরে থাকিস।

‘এর বেশ কিছুক্ষণ পর আমাকে ফোন করে ছেলে বলে- বাবা আমার একটা পা চলে গেছে। আমি মারা যাচ্ছি। সবাই আমাকে মাফ করে দিও।’

শনিবার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে বসে ছেলের সঙ্গে বলা শেষ কথা গুলো এভাবেই জানান নিহত মমিনুল হকের বাবা স্কুল শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ফোনে ওইটুকু কথা বলার পর লাইন কেটে যায়। এরপর রাত ১টার পরে এসে হাসপাতালে ছেলের লাশ পাই। 

আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ড: ৩ ফায়ার সার্ভিসকর্মীসহ নিহত বেড়ে ১৮

চট্টগ্রামের মহসিন কলেজ থেকে বিবিএ শেষ করে এমবিএ করছিলেন মবিনুল হক। পাশাপাশি চার মাস আগে সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে যোগ দেন।

শোকে কাতর ফরিদুল ইসলাম ছেলের নানা বিষয় নিয়ে প্রলাপের মতো বলে যাচ্ছিলেন।

তিনি বলেন, আমার ছেলের পড়াশোনা প্রায় শেষের দিকে। বিয়ের কথা ছিল তার। কয়েকজন মেয়েও দেখা হয়েছে। তবে পাকা কথা হয়নি।

দুই ভাই এক বোনের মধ্যে মবিনুল দ্বিতীয়। তার বড় ভাই ফয়সাল কাজ করেন একটি ওষুধ কোম্পানিতে। ছোট বোন গোলাপীর বিয়ে হয়ে গেছে।