হুইলচেয়ারে বসে মেজর র্যাংক ব্যাজ পরলেন জীবন যুদ্ধে হার না মানা কানিজ
হুইলচেয়ারে বসে মেজর র্যাংক ব্যাজ পরলেন জীবন যুদ্ধে হার না মানা কানিজ। ২০১২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে প্রশিক্ষণ চলাকালে দুর্ঘটনায় পড়ে মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায় সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তার।
কিন্তু তিনি দমে যাননি। নিজের অদম্য মানসিক শক্তি এবং সহকর্মীদের সহায়তায় দৈনন্দিন কার্যক্রম স্বতঃস্ফূর্ততার সঙ্গে পালন করেছেন। শনিবার হুইলচেয়ারে ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে আসেন তিনি। সেখানে বাহিনীর সব ফরমেশন কমান্ডারদের উপস্থিতিতে এক আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে তাকে মেজর র্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, পক্ষাঘাতগ্রস্ত কানিজ ফাতেমা আজ শুধু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নয়, পুরো দেশ ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নারীসমাজের জন্য একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
আরও পড়ুন: প্রেমের টানে গাজীপুরে মার্কিন তরুণ, গ্রহণ করলেন ইসলাম ধর্ম
আইএসপিআর জানিয়েছে, কানিজ ফাতেমা দেশ সেবার একবুক স্বপ্ন নিয়ে ২০১১ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। তবে দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপটে তার পক্ষে সেনাবাহিনীর কঠোর ও সুশৃঙ্খল স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না।
কিন্তু এই অকুতোভয় নারী, ভাগ্যের কাছে হার না মেনে দেশের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে যেতে দৃঢ় প্রত্যয়ী ছিলেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কানিজ ফাতেমার এই অদম্য উদ্দীপনাকে সম্মান জানিয়ে সব বাধা উপেক্ষা করে ৬৯ বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদি কোর্সের সঙ্গে ২০১৩ সালে বিশেষ বিবেচনায় কমিশন দেয়।
পরবর্তী সময়ে কানিজ ফাতেমা হুইলচেয়ারের সাহায্যে চলাফেরা করলেও নিজের অদম্য মানসিক শক্তি এবং সহকর্মীদের সহায়তায় দৈনন্দিন কার্যক্রম স্বতঃস্ফূর্ততার সঙ্গে পালন করে আসছেন। তার ইচ্ছাশক্তির কাছে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা হার মেনেছে পদে পদে।
সেনাবাহিনীতে ২০০০ সালে নিয়মিত বাহিনীতে সর্বপ্রথম নারী অফিসার নিয়োগ দেয়া শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সাল থেকে নারী সৈনিকের সংযোজন, নারী অফিসারদের ইউনিট কমান্ড দেয়া, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে গুরুত্বপূর্ণ পদে নারী অফিসারদের নিয়োগসহ বিভিন্ন পদক্ষেপে দেশে নারী উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করেছে।