সড়ক ছেড়েছেন শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী-কর্মচারীরা
দিনভর দফায় দফায় সংঘর্ষের পর রাতে সড়ক ছেড়েছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী-কর্মচারীরা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনে থেকে উঠে শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে চলে যান। এ সময় ঢাকা কলেজের মূল ফটক আটকে দেওয়া হয়। এর আগে রাত সোয়া ১০টার দিকে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা সড়ক ছেড়ে চলে যান।
তবে তখনো মিরপুর সড়কের নীলক্ষেত থেকে সায়েন্স ল্যাব পর্যন্ত অংশে গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়নি। সড়কে অসংখ্য ভাঙা ইট ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়। দু’একটি রিকশা চলাচল করছিল। মোটরসাইকেলও চলতে দেখা যায়। রিকশা ও মোটরসাইকেল ঢাকা কলেজের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মাঝেমধ্যে শিক্ষার্থীদের সেগুলো আটকে কথা বলতে দেখা যায়। সে সময় অ্যাম্বুলেন্স ছেড়ে দেওয়া হচ্ছিল।
ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, আগামীকাল থেকে ঈদ পর্যন্ত আমাদের ক্যাম্পাসের সামনে ও সামনের সড়কে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। তাদের দাবি, নিউমার্কেট ও ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাস এলাকায় আর কোনো সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি চলবে না, ব্যবসার নামে কোনো সন্ত্রাস চলবে না।
তিনি আরও বলেন, নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছে আমরা ঢাকা কলেজের ক্যাম্পাসের পরিচয় দিলে তারা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। একদম নিম্নমানের পণ্য দেয়। পণ্যের দাম বাড়িয়ে বলে ব্যবসায়ীরা। মা-বোনেরা নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে গেলে তাঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে ব্যবসায়ীরা। বোন সঙ্গে গেলেও বলে গার্লফ্রেন্ড। আমরা নিত্যদিন এই হয়রানির শিকার হচ্ছি।
এর আগে সন্ধ্যার পর কয়েক ঘণ্টা ঢাকা কলেজের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে থাকেন শিক্ষার্থী, অন্যদিকে নিউমার্কেটের সামনে ছিলেন ব্যবসায়ী-কর্মচারীরা
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর নিউমার্কেটের একটি খাবারের দোকানের কর্মীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীর কথা-কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে গভীর রাতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকানকর্মীরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। সংঘর্ষ রাত আড়াইটা পর্যন্ত গড়ায়।
এ ঘটনার জেরে মঙ্গলবার সকাল থেকে দিনভর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। বিকেলে পুলিশ এসে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে দুই পক্ষকে সরালেও পরিস্থিতি শান্ত করতে পারেনি। ঢাকা কলেজের ছাত্রদের বিকেলের মধ্যে ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তারা ছাড়েননি।
সন্ধ্যার পর থেকে শিক্ষার্থীরা কলেজের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। অন্যদিকে নিউমার্কেটের কাছে ব্যবসায়ী-কর্মচারীরাও অবস্থান নেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এর মধ্যেই দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
দুপুরে সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশতাধিক আহত হন। তাদের মধ্যে একটি কুরিয়ার সার্ভিসের একজন ডেলিভারিম্যান নিহত হয়েছেন। আহত তিনজন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।