অপরাধ থাকলেও কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারবে না

‘এক তরুণীর ছয় তরুণের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে’ সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া এমন একটি ভিডিও নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. নাজমুল হক। তিনি বলেছেন, মেয়েটির অপরাধ থাকলেও আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নিতে পারবে না।

ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এক তরুণীকে সারপ্রাইজ দিতে চাইছেন তার এক বন্ধুরা। দুই হাত দিয়ে তরুণীর চোখ বন্ধ করে ধরেন। এরপর চোখ খুলে দেন, দেখা যায় ধীরে ধীরে রেস্তোরাঁয় একে একে আরও পাঁচ তরুণ প্রবেশ করেন। এরপর ওই তরুণীকে ছয় যুবক নানা অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। এসবের মধ্যে অন্যতম অভিযোগ, মেয়েটি নাকি একই সঙ্গে ছয় ছেলের সঙ্গেই প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে গেছেন।

গত মঙ্গলবার ‘স্টার গল্প’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে এমন একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। যেখানে দেখা গেছে, মিরপুরের ওই রেস্তোরাঁয় ছয় যুবক মিলে তরুণীর কাছে নানা প্রশ্নের জবাব চাইছেন। একসময় তরুণী হাত থেকে একটি বস্তু ছুড়ে মারেন। একসময় তিনি কেঁদে ফেলেন। পরে এই ভিডিও নিয়ে চলেছে তুমুল প্রতিক্রিয়া।

আরও পড়ুন: প্রেমের ফাঁদে ৬ তরুণ, ভিডিও ভাইরাল

ভাইরাল ভিডিওর প্রতিক্রিয়ায় নাজমুল হক বলেন, অনলাইনে হেনস্থা মোটেও কাম্য নয়। যারা এই ভিডিও বা ছবি ছড়িয়েছে সেটা সাইবার অপরাধ। ওই মেয়ের নৈতিক সমস্যা থাকলে সেটার সমাধান মোটেই অনলাইনে হেনস্থা নয়। হয়তো ওই মেয়ের কাউন্সেলিং দরকার, তবে কাউকে এভাবে হেনস্থা করার অধিকার নাই কারো, আইন তো নিজের হাতে তুলে নেওয়া যায় না।

রোমান হক নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে কয়েকটি ভিডিও ও ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে একজন বলছেন, মেয়েটির সঙ্গে সম্পর্কে এমনভাবে জড়িয়েছিলেন যে তিনি সাইকো হয়ে গিয়েছিলেন। মেয়েটিকে তিনি অন্ধের মতো বিশ্বাস করতেন।

তার স্বজন বন্ধুবান্ধবরাও ওই মেয়ের কাছ থেকে দূরে থাকতে বলতেন, তিনি শুনতেন না। দামি উপহার সামগ্রী মেয়েকে তিনি দিতেন। একটা সময় তিনি তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারেন, মেয়েটি ছয়টি প্রেম করছে একই সঙ্গে। এরপর সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করে মিরপুরের ওই রেস্তোরাঁয় ডেকে আনেন। যুবকের দাবি, সকলেই তার প্রেমিক।

নাজমুল হক আরও বলেন, নয় বা ছয়, সংখ্যা যেটাই হোক, এটার জন্য আপনি কতখানি প্রতারণার অভিযোগ তুলবেন সেটা আপনার অধিকার এবং তদন্ত সাপেক্ষে প্রচলিত আইন মোতাবেক সুবিচার পাবেন সেটাও অধিকার। তবে এটা আপনার অনধিকার ও অপরাধ যে আপনি তাকে মানুষের সামনে প্রকাশ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেনস্থা করবেন। ওই মেয়ের এখন এটা অধিকার, সে তার কথিত প্রেমিক ওই ৬ তরুণের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবে।