৪৫ বছর পর মায়ের দেখা পেল কুলসুম

কুলসুম ও তার মা
কুলসুম ও তার মা  © ফাইল ফটো

সালটি ১৯৭৭। কুলসুমের বয়স তখন মাত্র পাঁচ বছর। বাবা নেই। আগুনে পুড়েছে শেষ সম্বল থাকার ঘরটিও। টানাটানির সংসারে মেয়ের উন্নত জীবন দেখতে চেয়েছিলেন মা। দেবরের পরামর্শে মেয়ের ঠাঁই হয় অনাথ আশ্রমে। সেখানেই বেড়ে উঠছিলেন কুলসুম। এর মধ্যেই কুলসুমের জীবনে দূত হয়ে আসে সুইজারল্যান্ডের এক দম্পতি। অনাথ আশ্রম থেকেই তাকে দত্তক নিয়ে যান তারা। এরপরের গল্পটা সিনেমার কাহিনিকেও হার মানাবে।

পাঁচ বছরের সেই কুলসুম সুইজারল্যান্ডে বেড়ে উঠলেও ভুলতে পারেননি মায়ের কথা। অবশেষে ৪৫ বছর পর মাকে খুঁজে পেলেন কুলসুম। যদিও তার নাম এখন ম্যারিও সিমো ভ্যামৌ। শনিবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আপন নীড়ে ফিরেছেন কুলসুম।

আপন আঙিনায় নামতেই কুলসুমকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন স্বজনরা। এ সময় ভিড় জমান আশপাশের লোকজনও। কয়েক দশক পর আপনজনদের কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন কুলসুম। ফেরেন মায়ের কোলে।

মাকে পেয়ে পাগলপ্রায় কুলসুম। ক্ষণে ক্ষণে মাকে চুমু খাচ্ছেন আর জড়িয়ে ধরছেন। জানালেন তার না বলা কথা। তেমন একটা বাংলা বলতে পারেন না। তবু মাকে খুঁজে পেয়ে যেন স্বস্তি খুঁজে পেলেন। সঙ্গে এলেন কুলসুমের স্বামী আন্দ্রে সিমন ভারমুট। তিনিও জানালেন নিজের মনের অনুভূতি।

আরও পড়ুন: শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের জামিন শুনানি আজ

কুলসুম বলেন, অসচ্ছল পরিবারে জন্ম নেয়ায় পাঁচ বছর বয়সে চাচার পরামর্শে আমাকে অনাথ আশ্রমে দেন মা। ওই সময় আমাদের ঘরটিও আগুনে পুড়ে যায়। তবে অনাথ আশ্রম থেকেই আমাকে দত্তক নেন সুইস দম্পতি। এরপর সেখানেই সবকিছু। হ্যাঁ এটা ঠিক। আমি একটা ভালো জীবন হয়তো পেয়েছি। তবে আমার ৪৫ বছরের সুখে ওই পাঁচ বছর দুঃখ হয়েই চেপে আছে। মনের মধ্যে প্রতিটা মুহূর্তই চাওয়া ছিলো পরিবারকে ফিরে পাওয়ার। অবশেষে খুঁজে পেয়েছি।

কুলসুম আরও বলেন, মায়ের নাম মরিয়ম। আমরা চার ভাই-বোন ছিলাম। বাবা ছিলেন ফার্মাসিস্ট। আমি মায়ের সঙ্গে লঞ্চে করে এসেছিলাম ঢাকায়। এরপর উঠেছিলাম মোহাম্মদপুরে চাচার বাসায়। যদিও ঠিকানাটা মনে নেই। এতো বছর পর পরিবারকে পেয়ে অনেক খুশি।


সর্বশেষ সংবাদ