১৫ মার্চ ২০২২, ০৯:২৫

করোনা মহামারির আগের অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

আজ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক ক্লাস শুরু হয়েছে  © ফাইল ফটো

করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর একে একে বন্ধ হয়ে যায় দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীরা হয়ে পড়ে ঘরবন্দি। কার্যত অচল হয়ে পড়েছিল দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। তবে এ সময়ে অনলাইন, টেলিভিশনসহ নানা মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার চেষ্টা চালায় সরকার। কিন্তু তা কতটা কাজে এসেছে এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষা এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন সবাই। দাবি ওঠে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার।

দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সেই অচলায়তন থেকে বেরিয়ে এসেছে। আজ মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রেণিকক্ষে স্বাভাবিকভাবে ক্লাস শুরু হয়েছে। সোমবার (১৪ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, পুরোদমে ক্লাস শুরু করতে মূল বাধা ছিল ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের দুই ডোজ টিকা দেওয়া। প্রথমে এক কোটি ২৯ লাখ শিক্ষার্থী ছিল তালিকায়। পরে আরো ১০ লাখ শিক্ষার্থী যুক্ত হয়। এ ছাড়া সংক্রমণ দুই শতাংশের আসার লক্ষ্য ছিল। সবশেষ গত রোববার করোনা শনাক্তের হার ছিল ১.৮৮ শতাংশ।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর জানায়, দেশে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী এক কোটি ৩৯ লাখ ৬৩ হাজার ৯৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, এক কোটি ১০ লাখ ৬৯ হাজার জন দ্বিতীয় ডোজের আওতায় এসেছে। প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে এক কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার জনকে। অন্তত ৯৮ শতাংশ প্রথম ডোজ ও ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে। এ সংখ্যা গত কয়েকদিনে আরও বেড়েছে।

আরো পড়ুন: সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের বিপক্ষে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা, সায় নেই কর্তৃপক্ষের

অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেছেন, ‘দুই ডোজের মধ্যে একটি পার্থক্য থাকতে হয়। এ জন্য সবাইকে দ্রুত টিকা দেওয়া যাচ্ছে না। যারা টিকা পাচ্ছে, তারা নিয়মিত ক্লাসে যাবে। অনলাইন ও দূরশিক্ষণও চালু থাকবে।’

এর আগে গত শনিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, ১৫ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস শুরু হবে। এদিন থেকে স্বাভাবিক নিয়মে ক্লাস চলবে। নতুন কারিকুলামে পড়তে পারলে শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ে যাওয়া লাগবে না। মাধ্যমিকে পাঠদান হবে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। এর আলোকে বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা স্তরের প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। তবে বন্ধ থাকে প্রাক-প্রাথমিক স্তর।

চলতি বছরের শুরুতে সংক্রমণ আবারও বেড়ে গেলে ২১ জানুয়ারি থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। এক মাস পর গত ২২ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়।

আরো পড়ুন: আসন ফাঁকা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম শেষ করছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো

দুই বছর বন্ধ থাকার পর সারাদেশের প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়েছে আজ মঙ্গলবার থেকে। সপ্তাহের মঙ্গলবার ও রোববার দুই দিন ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে তাদের। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মাহাপরিচালক আলমগীর মুহাম্মদ মনসুরুল আলম জানান, প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে। এ ছাড়া গত দুই মার্চ শুরু হওয়া প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান চলমান থাকবে।

এর আগে গত ২ মার্চ প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিশু শিক্ষার্থীদের সপ্তাহের রোববার ও মঙ্গলবার শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের আদেশ জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই আদেশে জানানো হয়েছিল, ১৫ মার্চ থেকে সপ্তাহে দুই দিন প্রাক-প্রাথমিকের সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।