দেশে ফিরেছেন ‘সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিক-ক্রু
ইউক্রেনে রকেট হামলার শিকার বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিক-ক্রু দেশে ফিরেছেন। তাদের বহন করা বিমানটি বুধবার (৯ মার্চ) ১২টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল (রাহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।
রোমানিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত দাউদ আলী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, নাবিকদের বোর্ডিং ও ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। ২৮ বাংলাদেশি নাবিক গত ৬ মার্চ ইউক্রেন থেকে মলদোভা হয়ে রোমানিয়ায় পৌঁছান। বুখারেস্ট থেকে বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাত ১০টায় টার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তারা প্রথমে ইস্তাম্বুল পৌঁছান। সেখান থেকে আরেকটি ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছাবেন।
তবে জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার নিহত মোহাম্মাদ হাদিসুর রহমানের মরদেহ ইউক্রেনের অদূরে একটি বাংকারের ফ্রিজারে রাখা হয়েছে। সেটি সুবিধাজনক সময়ে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন মো. মুজিবুর রহমান একই তথ্য নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: হাদিসুরের মৃত্যুতে রুশ দূতাবাসের শোক প্রকাশ
বাকি ২৮ নাবিকের মধ্যে রয়েছেন, বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের মাস্টার জিএম নুর ই আলম ও সহকারী মাস্টার মনসুরুল আমিন খান। বাকিরা হলেন সেলিম মিয়া, রমা কৃষ্ণ বিশ্বাস, রুকনুজ্জামান রাজিব, ফারিয়াতুল জান্নাত তুলি, ফয়সাল আহমেদ সেতু, মোহাম্মদ ওমর ফারুক তুহিন, সৈয়দ আসিফুল ইসলাম, রবিউল আউয়াল।
সালমান সরওয়ার সামি, ফারজানা ইসলাম মৌ, শেখ সাদি, মাসুদুর রহমান, জামাল হোসাইন, মোহাম্মদ হানিফ, আমিনুর ইসলাম, মহিন উদ্দিন, হোসাইন মোহাম্মদ রাকিব, সাজ্জাদ ইবনে আলম, নাজমুল উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, সরওয়ার হোসাইন, মাসুম বিল্লাহ, মোহাম্মদ হোসাইন, শফিকুর রহমান, আতিকুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।
তুরস্ক থেকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে জলসীমায় নোঙর করে ১৮০ মিটার দৈর্ঘ্যরে বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে অলভিয়া বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়।
জাহাজটি ২৯ জন নাবিক ও ক্রু নিয়ে সেখানেই নোঙর করা অবস্থায় আটকা পড়ে। গত ২ মার্চ বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ২৫ মিনিট ও ইউক্রেন সময় ৫টা ২৫ মিনিটে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে রকেট হামলা হয়। হামলায় জাহাজের ব্রিজ ধ্বংস হয়ে যায়। মারা যান হাদিসুর রহমান। জাহাজে আটকে থাকা বাকি ২৮ নাবিক ও ক্রু আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ৩ মার্চ সন্ধ্যায় টাগবোটের সাহায্যে তাদের তীরে আনার পর অলভিয়া এলাকার একটি বাংকারে রাখা হয়।