৫৩ শতাংশ ছাত্রীই যৌন হয়রানির শিকার
দেশে যৌন হয়রানির শিকার নারীদের ৫৩ শতাংশই ছাত্রী। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জরিপ প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে সংস্থাটি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যৌন হয়রানির শিকার নারীই উল্টো সামাজিকতার ভয়ে গুটিয়ে নেয় নিজেকে। এ বিষয়ে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কাঙ্ক্ষিত ফল আসছে না। এটি নির্মূল করতে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সচেতনতামূলক কর্মসূচিও জরুরি।
২০১০ সালে উচ্চ আদালত যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধে একটি নির্দেশনা দেন। তাতে বলা হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ যেসব প্রতিষ্ঠানে নারী রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানে একজন নারীর নেতৃত্বে যৌন নিপীড়নবিরোধী কমিটি থাকতে হবে। কমিটিতে নারীদের প্রাধান্য থাকতে হবে। একটি বাক্সে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতি তিন মাস পর ওই বাক্স খুলে কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে কমিটি। তদন্তে নিরপেক্ষ ফল পেতে গোপনীয়তা বজায় রাখতে হবে। কেউ চাইলে সরাসরি কমিটির কাছে অভিযোগ করতে পারবেন। কিন্তু ১২ বছর পরে হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। কিছু প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের কমিটি থাকলেও বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানেই নেই।
তথ্য মতে, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ৮১৮ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ২০২০ সালে শিশু ধর্ষণের এই সংখ্যা ছিল ৬২৬। এ ছাড়া একই সময়ে আরো ৯৪ শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা গেছে ১৪ মেয়ে শিশু। এই সময়ে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১১০টি শিশু।
আরও পড়ুন- ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, কারাগারে হলি ফ্যামিলির সেই শিক্ষক
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) জরিপের তথ্যে জানানো হয়েছে, ২০২১ সালে ৬৯২ নারী ও ৯৪৫ শিশু-কিশোরী যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন ১১ নারী। এ ছাড়া ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন তিন নারী। ধর্ষণের চেষ্টার শিকার ৮২ ও যৌন হয়রানির শিকার হন আরো ৮২ নারী। অবশ্য বিশ্বজুড়ে প্রতি ১০০ জনে সাত নারী কোনো না কোনোভাবে যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন বলে তথ্য দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।