নটরডেম ছাত্রের পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন শিক্ষামন্ত্রী
বাবা পেশায় একজন অটো চালক। ছেলে রায়হানের স্বপ্ন প্রকৌশলী হওয়া। রোটারী ক্লাব চাঁদপুরের সহযোগিতায় এবছর ভর্তি হলো নটরডেম কলেজে। ভর্তি হতে পারলেও ঢাকাতে থাকা-খাওয়া, পড়ালেখার খরচ কোথায় পাবে? তার পরিবারের পক্ষে ব্যয় বহন করা সমম্ভব না। তাহলে কি তার স্বপ্ন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যাবে? কিন্তু না। এবার রায়হানের প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব নিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি।
চাঁদপুর সদর উপজেলার ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের দরিদ্র অটো চালকের সন্তান রায়হান গাজী। চাঁদপুর রোটারি ক্লাবের বৃত্তি নিয়ে পুরান বাজার মধূসুদন উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে শুরু হয় যার মাধ্যমিকের পড়াশোনা। ৮ম শ্রেণির ফার্স্টবয় ৯ম শ্রেণিতে উঠে কোন গ্রুপ নেবে? সে বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে চায় কারন তার স্বপ্ন প্রকৌশলী হবে। কিন্তু তাতে বাঁধা হয়ে দাড়ায় তার পিতার দারিদ্র্যতা।
বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনায় অনেক খরচ। তার বাবার পক্ষে এ খরচ বহন করা সম্ভব না। আবারও এগিয়ে এলা রোটারি ক্লাব। এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে স্বপ্ন পূরণে আরেক ধাপ এগিয়ে গেলো। একাদশ শ্রেণিতে নটরডেম কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়। ভর্তিও হয় কিন্তু এবার আরো বড় চিন্তা টিউশন ফি কিভাবে দিবে?
আরও পড়ুন: মেডিকেলে আবেদন করতে পারছেন না মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা
রোটারি ক্লাব অব চাঁদপুরের সভাপতি রোটারিয়ান শাহেদুল হক মোর্শেদ আশ্বাস দেন কলেজের টিউশন ফি রোটারি ক্লাব বহন করবে।
কিন্তু সে ঢাকায় থাকবে-খাবে কোথায়? এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণির সাথে তার বাস ভবনে দেখা করেন রোটারি ক্লাবের প্রতিনিধি নাজিমুল ইসলাম। তিনি বলেন, রায়হানের সব কথা শোনার পরে আপা (মন্ত্রী) বলেন ‘ওরতো আগামী সপ্তাহ থেকেই ক্লাস শুরু হবে, ওকে ২৭ ফেব্রুয়ারি রবিবার সন্ধ্যায় চলে আসতে বল, ওর উচ্চ শিক্ষার সব দায়িত্ব আমি নিবো’
নাজিম জানান, তার আশ্বাস পেয়ে গতকাল রবিবার রায়হান তার বাবা ও মোর্শেদ ভাইকে নিয়ে দেখা করেছি। আপা (মন্ত্রী) মাতৃস্নেহের পরম মমতায় রায়হানের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেন ‘তুমি শুধু পড়বে, তোমার প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে, তোমার সব দায়িত্ব আমার’ তখন রায়হান ও তার বাবার চোখে আনন্দের অশ্রু ঝরছে, তারা শিক্ষামন্ত্রীর মহানুভবতায় আবেগে আপ্লুত হয়ে যান।