শিক্ষাখাতের ক্ষতি পোষাতে ছুটির দিনে ক্লাস নেয়ার পরামর্শ
করোনাকালে প্রায় দুবছর বিঘ্নিত হয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষাখাতের এই ক্ষতি পোষাতে পাঠ পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার কথা বলা হলেও সেটির বিস্তারিত কিছু জানায়নি সরকার।
এদিকে অভিভাবকরা বলছেন, দ্রুত স্বাভাবিক রুটিনে ফিরে প্রয়োজনে বাড়তি ক্লাস-পরীক্ষা নেয়া জরুরি। গবেষকরাও মনে করেন, মৌলিক বিষয়গুলোর ঘাটতি চিহ্নিত করে প্রয়োজনে ছুটির দিনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া উচিৎ।
করোনাকালে শিক্ষায় কতটা ক্ষতি হলো তা নিয়ে কোন দৃশ্যমান গবেষণা নেই সরকারের। তবে দূরশিক্ষণের মাধ্যমে ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্টসহ নানা কার্যক্রম চলেছে বন্ধের মধ্যে। ক্ষতি পোষানোর বিষয়ে এখনই নজর দেবার তাগিদ দিচ্ছেন অভিভাবকরা।
প্রাক-প্রাথমিকের শিশুরা গত দুবছরে স্বাভাবিক শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। প্রথাগত মূল্যায়ন ছাড়াই উপরের শ্রেণিতে উঠেছে শিক্ষার্থীরা। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেয়া এসএসসি ও এইচএসসির ফলের গড়ে রেকর্ড হলেও ক্ষতি পোষাতে নেই কোনো দৃশ্যমান পরিকল্পনা।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, আমরা আমাদের রিকভারি প্ল্যানের মধ্যে যদি দেখি যে কোনো জায়গায় দিন কমালে সুবিধা হবে, আমরা হয়তো সেটা ভেবে দেখবো।
এ ব্যাপারে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, আমাদের একটা রিকভারি প্ল্যান আছে। শিখন ঘাটতি কীভাবে পূরণ করা যায় তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করেছি আমরা এরই মধ্যে।
মৌলিক বিষয়ের ঘাটতি পূরণে প্রয়োজনে বন্ধের দিনেও ক্লাস নেবার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের। সেক্ষেত্রে শিক্ষাখাত সংশ্লিষ্টদের প্রণোদনা দেয়ার পরামর্শ তাদের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ বলেন, একদিন বা দুইদিন এমনকি ছয় মাসেও এই লার্নিং গ্যাপ পূরণ করা সম্ভব নয়। এর জন্য একটা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। যে বিষয়গুলো অত্যাবশ্যকীয়ভাবে জানতে হয় সে বিষয়গুলোর জন্য আমরা অতিরিক্ত টিচিং-লার্নিংয়ের সুযোগ তৈরি করতে পারি। এই অতিরিক্ত ক্লাস নেয়ার জন্য শিক্ষকদের জন্য যদি কিছু সম্মানীর ব্যবস্থা রাখেন তাহলে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে শিক্ষকরাও এতে সাড়া দেবেন।
তবে অতিরিক্ত ক্লাস যেনো শিক্ষার্থীদের জন্য বোঝা না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখার তাগিদও দিচ্ছেন শিক্ষাবিদরা।