৫২৮ প্রাথমিকে নেই শহীদ মিনার, কলাগাছের মিনারে শ্রদ্ধা
ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বরগুনার ৫২৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মিত হয়নি শহীদ মিনার। এগুলোর কোনোটিতে কলাগাছ ও বাঁশ দিয়ে শহীদ মিনার বানিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হলেও বেশিরভাগ স্কুলেই পালিত হচ্ছে না দিবসটি। ফলে মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস এবং তাৎপর্য জানতে পারছে না কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বরগুনায় মোট প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৭৯৮টি। যার মধ্যে ৫২৮টি স্কুলে নেই শহীদ মিনার। সদর উপজেলায় ২২৮টি স্কুল থাকলেও শহীদ মিনার আছে ১২৯টিতে, আমতলী উপজেলায় ১৫২টি স্কুলের মধ্যে শহীদ মিনার আছে ১৪টি স্কুলে, বেতাগীতে ১২৯টি স্কুলের ৫৪টি স্কুলে আছে শহীদ মিনার। এছাড়া পাথরঘাটার ১৪৯টি স্কুলের মধ্যে ৪টি, বামনায় ৬২টি স্কুলের মধ্যে ৫৬টি এবং তালতলীর ৭৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শহীদ মিনার আছে মাত্র ১৩টি স্কুলে। জেলার মোট ৭৯৮টি স্কুলের মধ্যে মাত্র ২৭০টি স্কুলে শহীদ মিনার আছে।
শহীদ মিনার নেই এমন কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, আমাদের স্কুলে স্থায়ী কোনো শহীদ মিনার নেই। এজন্য আমরা সঠিকভাবে মাতৃভাষা দিবস পালন করতে পারছি না। একুশে ফেব্রুয়ারি এলেই কলাগাছ, কাঠ ও মাটি দিয়ে আমরা নিজেরাই মিনার বানাই। আমরা আমাদের স্কুলে স্থায়ী শহীদ মিনার চাই।
শিক্ষকরা বলেন, আমাদের স্কুলে স্থায়ী শহীদ মিনার না থাকায় মাটি ও কলাগাছ দিয়ে মিনার বানাতে হয়। এতে শহীদ মিনারের ডিজাইন ঠিক থাকে না। স্কুলে শহীদ মিনার না থাকায় শিক্ষার্থীদের এই দিবস সম্পর্কে তেমন কিছু জানতে পারছে না।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সোবহান বলেন, ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর এবং বিজয়ের ৫০ বছর পার হলেও বরগুনার অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। এটা মোটেও ভালো খবর নয়। সরকার ভাষা আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতি ধরে রাখতে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার বাধ্যতামূলক করেছেন। সেখানে বরগুনার স্কুলগুলোর চিত্র পুরোই উল্টো। স্কুলে স্কুলে শহীদ মিনার থাকলে শিশুরা পেছনের ইতিহাস জানতে আগ্রহী হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এমএম মিজানুর রহমান বলেন, জেলার দুই তৃতীয়াংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। শিগগিরই শতভাগ স্কুলে স্থায়ী শহীদ মিনার নিশ্চিত করা হবে।