১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:৫১

৮০ বছরের পুরোনো স্কুল এখন গুদাম ঘর

সত্য নারায়ণ প্রাথমিক বিদ্যালয়  © সংগৃহীত

ব্রিটিশ আমলে ‘পাঠশালা’ ছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতীয়করণ করে নাম দেয়া হয় নারায়ণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এক সময় খুলনা নগরের দৌলতপুরে শিক্ষার বাতিঘর ‘সত্য নারায়ণ’ বিদ্যালয়ের বাতিই এখন বন্ধ। শিক্ষার্থী না থাকায় ২০০৭ সালে বিদ্যালয়টির সব শিক্ষককে বিভিন্ন জায়গায় বদলি করে সেটিকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে এই মাসেই

পলেস্টার খসে পড়া পরিত্যক্ত দোতলা ভবনটি কোন মতে দাড়িয়ে আছে। ভবনের পূর্ব দিকে টিন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে জুট টেক্সটাইল মিলসের একটি পাটের গুদামঘর। এক সময় যে এটি বিদ্যালয় ছিলো সেটি বোঝার কোন উপায় নেই। দখল হয়ে গেছে বিদ্যালয়ের আশপাশের সব জমি। ভবনটি ভেঙে পড়লেই অবশিষ্ট জায়গাটা দখলে নেবার দিন গুনছে সবাই।

বিদ্যালয়টি দৌলতপুর স্টিমারঘাটের কাছে ভৈরব নদের পাশে। এর আশপাশে রয়েছে বেশ কিছু পাটগুদাম। এখানে আছে কলোনি। একটা ওই কলোনির শিশুরা বিদ্যালয়টিতে পড়ত। ভৈরব নদ পার হয়ে দিঘলিয়া থেকেও অনেক শিশু এ বিদ্যালয়ে আসত।

দৌলতপুর থানা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সত্য নারায়ণ নামের এক ব্যক্তি তার বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ১৯৪২ সালের দিকে পাঠশালা গড়ে তোলেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর সত্য নারায়ণ পরিবার নিয়ে ভারতে চলে যান। এরপর স্থানীয় লোকজন সেটিকে অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে পরিচালনা করতেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে সত্য নারায়ণের ১৫ শতক জমি নিয়ে ওই বিদ্যালয়টিকে জাতীয়করণ করা হয়।

ওই বিদ্যালয়ের সর্বশেষ সহকারী শিক্ষক ছিলেন আবুল হোসেন। বর্তমানে তিনি অবসরে আছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই বিদ্যালয়ের সর্বশেষ প্রধান শিক্ষক ছিলেন জহির নামের এক ব্যক্তি। চাকরি থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান। এরপর আর কাউকে সেখানে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। সর্বশেষ তিনজনের মতো সহকারী শিক্ষক ছিলেন। বিদ্যালয়টিতে মোট শিক্ষার্থী ছিল ১০ থেকে ১৫ জন।

আরও পড়ুন: ৩ কারণে শিক্ষার্থী পাচ্ছে না গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো

ওই সময় এক শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে এসে এমন অবস্থা দেখে বলেছিলেন, মাত্র এই কয়জন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষকদের বেতন দেওয়া যায় না। এরপর শিক্ষকদের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বদলি করে দেওয়া হয়।

খুলনা নগরের সদর, সোনাডাঙ্গা ও দৌলতপুর থানা নিয়ে একটি প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়। ওই কার্যালয়ের শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ নুরুল ইসলাম বলেন, সত্য নারায়ণ বিদ্যালয়ের নামে ১৫ শতক জমি রয়েছে। বর্তমানে ভবন বাদে প্রায় সবই প্রভাবশালীদের দখলে। ওই জমি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।