দেশে উচ্চ শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্ব বেশি
দেশে উচ্চশিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে একটা বড় অংশই এখন বেকার। দেশে প্রতিবছর ২০ লাখের বেশি জনশক্তি শ্রমবাজারে প্রবেশ করে। যেখানে কর্মসংস্থানের মাত্র ৫ শতাংশ সরকারি খাতে আর ৯৫ শতাংশই বেসরাকারি উৎসে।
কিন্তু উচ্চশিক্ষা সামাপ্ত করে বেশিরভাগই এখন সরকারি চাকরির জন্য অপেক্ষা করেন বছরের পর বছর। একাধিক বিসিএস এবং সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিয়ে অনেকের মধ্যে হতাশা তৈরি হয় কারণ যে পরিমাণ চাকরি প্রত্যাশী তার তুলনায় চাকরির সুযোগ নেই।
শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সম্প্রতি একজন তরুণ 'ভাতের বিনিময়ে পড়ানোর বিজ্ঞাপন' দেয়ার পর করোনা মহামারিতে কর্মসংস্থান পরিস্থিতি কতটা সংকট তৈরি হয়েছে তার একটি চিত্র সমানে আসে।
আরও পড়ুন: তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে দ্বিতীয় ধাপে সুযোগ ২৭ ফেব্রুয়ারির পর
ইংরেজিতে মাস্টার্স পাশ একজন ছাত্রী জানান, পড়াশোনা শেষ করতেই তার আটাশ বছর বয়স হয়ে যায়। সরকারি চাকরির বয়স ত্রিশ বছরের মধ্যে একটি বিসিএস এবং ২০টির মতো সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করেন। কিন্তু মহামারির মধ্যে চাকরির পরীক্ষা বন্ধ থাকা আর বয়স শেষ হবার দুশ্চিন্তায় পেয়ে বসে তাকে।বেকারত্বের এই হতাশা থেকে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি।
চাকরি প্রত্যাশী এই তরুণী বলেন, ‘বয়সের সীমাবদ্ধতার কারণে আমি আশা নিয়ে বাঁচতে পারছি না যে সামনে পড়াশোনা করবো, করে এটা হয়নি অন্যটা হবে এরকমও হচ্ছে না। একাধিক পরীক্ষা, তারওপরে দুর্নীতির কারণে প্রশ্ন আউট হচ্ছে। বিভিন্ন কারণে আসলে আমি অনেকটা হতাশ হয়েই আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলাম। আসলে খুব বিষণ্ন। আমি এখন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ওষুধ নিচ্ছি।’
চাকরি প্রত্যাশী একজন ফয়সাল মাহামুদ বলেন, ‘আপনি যদি লক্ষ্য করেন ওইভাবে কিন্তু বিষয়ভিত্তিক চাকরি নাই। সবাই বিসিএস এর চেষ্টা করে। বিসিএস যখন না হয় তখন ব্যাংকে বা অন্যান্য সেক্টরে চেষ্টা করে। যাদের ত্রিশ বছরের পরে হচ্ছে না ওরা তখন অন্য দিকে যায়।’
আরও পড়ুন: রাবি হবে ‘মডেল’ বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা হাফিজা খানম বলেন, ‘যতদিন না চাকরি না হয়, ততদিন পর্যন্ত চেষ্টা করতে হয় আর বিসিএসএর ব্যাপারটা হচ্ছে দীর্ঘসূত্রিতা রয়েছে। সাড়ে তিন চার বছর লেগে যায় একটা বিসিএস শেষ করতে।’
আরেকজন চাকরি প্রত্যাশী শারমিন আক্তার বলেন, ‘যাদের বয়স অল্প সময় আছে, তারা এত বেশি হতাশ যে তারা অন্য কিছু চেষ্টা করবে সেই শক্তিটাই তাদের মধ্যে আর থাকে না।’