চাকরি পাচ্ছেন ‘ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাওয়া’ সেই আলমগীর
দুই বেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাওয়া বগুড়ার ‘সেই আলমগীর কবির’ স্বপ্ন আউটলেটে চাকরি পাচ্ছেন। তার জন্য চাকরির ব্যবস্থা করেছেন বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।
বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান আলমগীর কবির। তার সঙ্গে কথা বলা শেষে চাকরির বিষয়টি নিশ্চিত করেন এসপি সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। গণমাধ্যমকে তিনি জানান, যুবক আলমগীর কবিরকে বগুড়ার স্বপ্ন আউটলেটে চাকরি দেওয়া হবে। তবে কোন পদে তার চাকরি হচ্ছে তা এখনও নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।
আরও পড়ুন: ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাওয়া আলমগীরের নানা কীর্তি ফাঁস
জেলা পুলিশ কার্যালয় সূত্র জানায়, আলমগীর কবিরের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা কথা বলেন এসপি সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।
এ বিষয়ে এসপি বলেন, আলমগীরের ওই বিজ্ঞাপনের সত্যতা যাচাই করার জন্য তার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। কথা বলে মনে হয়েছে তার চাকরি আসলেই প্রয়োজন। তবে এটাও ঠিক যে ওই ধরনের বিজ্ঞাপন দেওয়া হীন মানসিকতার পরিচয়। সে কথা তাকে বলেছি।
এদিকে চাকরি পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় আলমগীর বলেন, ‘এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারছি না। আগে দেখি যোগ্যতা অনুযায়ী কেমন চাকরি পাই। ’
জানা যায়, জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার বাসিন্দা মো. আলমগীর কবির (৩২) বগুড়া সদর উপজেলার জহুরুলনগর একতলা মসজিদ এলাকার পাশের একটি বাড়িতে থাকেন। তিনি বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেছেন। ২০২০ সালে স্নাতকোত্তর পাসের পর থেকে চাকরি খুঁজছেন তিনি, কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী চাকরি পাননি। তাই পেশায় ‘বেকার’ উল্লেখ করে বগুড়া শহরের জহুরুলনগরের আশেপাশের এলাকায় প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের গণিত ছাড়া সব বিষয় পড়ানোর জন্য তিনি বিজ্ঞাপনটি দেন।
আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের প্যাডে ঢাবির তিন হলের নাম বিকৃতি
সাদা কাগজে কালো কালিতে প্রিন্ট করা বিজ্ঞাপনটি দেখা যায় বগুড়া শহরের বিভিন্ন দেয়ালে ও ইলেকট্রিক খুঁটিতে। সেখানে তিনি লেখেন, পড়ানোর বিনিময়ে কোনো অর্থ চান না। তাকে সকাল ও দুপুর দু’বেলা ভাত খাওয়ালেই হবে। দেশে এ ধরনের বিজ্ঞাপন সাধারণত দেখা যায় না। তাই বগুড়ার আলমগীর কবিরের এমন বিজ্ঞাপন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। দেয়ালে দেয়ালে লাগানো সেই বিজ্ঞাপনের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন এক ব্যক্তি। এরপর নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় পোস্টটি। এতে আলমগীর নিজেই বিব্রত অবস্থায় পড়েন। তিনি জানান, ফেসবুকে ওই পোস্ট তিনি করেননি। অন্য কেউ করেছেন।
বিজ্ঞাপনের বিষয়টি ভাইরাল হলে আলমগীর কবিরের খোঁজ শুরু করে বগুড়া জেলা পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, মানবিক দিক বিবেচনায় আলমগীরের খোঁজ করা হয়।