৩১ জানুয়ারি ২০২২, ১১:৩৮

যেভাবে হত্যা করা হয় মেজর সিনহাকে

মেজর (অব.) সিনহা  © সংগৃহীত

টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান (৩৬)। ঘটনার দেড় বছর পর আজ সোমবার (৩১ জানুয়ারি) এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণার জন্য আদালত দিন নির্ধারণ করেছেন। দুপুরে রায় ঘোষণা করা হবে। প্রদীপের রোষানলে নির্যাতিত শত পরিবারের চাওয়া একটাই- প্রদীপ ও তার সহযোগীদের যেন ফাঁসি হয়। আসুন, জেনেনি কীভাবে হত্যা করা হয়েছে মেজর (অব.) সিনহাকে।

'লেটস গো' নামে একটি ভ্রমণবিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য প্রায় এক মাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকায় অবস্থান করছিলেন মেজর (অব.) সিনহা ও তার টিম। তার টিমে ছিলেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথ। তারা হিমছড়ির নীলিমা রিসোর্টে উঠেছিলেন।

ঘটনাস্থলের পাশে অবস্থতি মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. আমিন প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। তিনি বলেন, ১ আগস্ট ছিল ঈদুল আজহা। ঈদের জামাত, পশু কোরবানি বিষয়ে কেন্দ্রীয় মসজিদের মাইকিংয়ের ঘোষণা শুনতে তিনিসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী মসজিদের ছাদে অবস্থান করছিলেন। ওই সময় এপিবিএনের চেকপোস্টে উচ্চস্বরে কথা শুনলে সেদিকে দৃষ্টি দেন। ওই সময় দেখা যায়, রুপালি রঙের একটি গাড়ির সামনে শামলাপুর ফাঁড়ির পরিদর্শক লিয়াকত পিস্তল তাক করে দাঁড়িয়ে আছেন। পাশে ব্যারিকেড দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন এসআই নন্দদুলাল। গাড়ির পূর্বে একজন এবং পশ্চিমে ২ জন এপিবিএন সদস্য দাঁড়ানো ছিলেন।

আরও পড়ুন- সিনহা হত্যা মামলার রায় আজ, প্রদীপ-লিয়াকতের ফাঁসি দাবি

হাফেজ আমিন জানান, তখন লিয়াকত চিৎকার করে গাড়ি থেকে যাত্রীদের বের হওয়ার নির্দেশ দিলে গাড়ির পশ্চিম পাশ থেকে দুই হাত ওপরে তুলে লম্বা চুল থাকা এক যুবক বের হন। লিয়াকতের নির্দেশ পেয়ে এপিবিএনের ২ সদস্য ওই যুবকের হাত ধরে রাখে। লিয়াকত আবারও চিৎকার দিয়ে গাড়িতে থাকা ব্যক্তিকে বের হওয়ার জন্য বলেন। এর পর গাড়ির ড্রাইভিং সিটে থাকা ওই ব্যক্তি হাত ওপরে তুলে গাড়ি থেকে বের হন এবং লিয়াকতের দিকে সামনে একটু এগিয়ে গিয়ে দাঁড়ান। এ সময়েই কোনো কথা না বলে লিয়াকত পরপর ২টি গুলি করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী আরও একাধিকজন জানান, প্রথমে দুই রাউন্ড গুলি করার পর কিছুটা এগিয়ে লিয়াকত আরও দুই রাউন্ড গুলি করেন সিনহাকে। এসময় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সিনহা। পরে লিয়াকতের নির্দেশে পুলিশের অন্য সদস্যরা সিনহার হাতে হাতকড়া পরান ও তার সঙ্গীকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলেন। গুলিবিদ্ধ সিনহা পানি খেতে চাইলেও লিয়াকত তাকে পানি দিতে নিষেধ করে। তৎকালীন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপের নির্দেশে তাকে গুলি করে লিয়াকত।