ঐতিহাসিক গণ অভ্যুত্থান দিবস আজ
আজ ২৪ জানুয়ারি। ঐতিহাসিক গণ অভ্যুত্থান দিবস। উনসত্তরের গণ অভ্যুত্থানের ধাক্কায় আইয়ুব খানের পতন ঘটে। বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ খ্যাত ছয়-দফা এবং পরবর্তীতে ছাত্রসমাজের দেয়া ১১ দফা কর্মসূচির প্রেক্ষাপটে সংঘটিত হয়েছিল এ গণ অভ্যুত্থান। এই গণঅভ্যুত্থানের পথ ধরে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা অর্জন করে।
ঊনসত্তর সালের ২০ জানুয়ারি গণ অভ্যুত্থানের নায়ক ঢাকা বিশ্বাবদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র শহীদ আমানুল্লাহ আসাদুজ্জামান (শহীদ আসাদ) পাক পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। আসাদের আত্মদানের পর তার রক্তামাখা শার্ট নিয়ে তাৎক্ষণিক মিছিলে বের করে ঢাকা বিশ্ব্যবিদ্যালয়ের ছাত্ররা। শুরু হয় তীব্র আন্দোলন। ২১, ২২, ২৩ জানুয়ারি শোকপালনের মধ্য দিয়ে ঢাকায় সর্বস্তরের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ২৪ জানুয়ারি এই অভূতপূর্ব গণ অভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন- অস্ত্রোপচারের পরও অনশন ভাঙেন নি রাতুল
উনসত্তরের এদিন ঢাকায় সচিবালয়ের সামনের রাজপথে নবকুমার ইনস্টিটিউটের নবম শ্রেণির ছাত্র কিশোর মতিউর ও রুস্তম শহীদ হন। প্রতিবাদে সংগ্রামী জনতা সেদিন সচিবালয়ের দেয়াল ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেয়। আন্দোলন পরিপূর্ণ গণ অভ্যুত্থানে রূপ নেয়।
বিক্ষুব্ধ জনগণ আইয়ুব-মোনায়েম চক্রের দালাল, মন্ত্রী-এমপিদের বাড়িতে এবং তাদের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত তৎকালীন দৈনিক পাকিস্তান ও পাকিস্তান অবজারভারে আগুন লাগিয়ে দেয়। জনগণ আইয়ুবগেটের নাম পরিবর্তন করে আসাদগেট নামকরণ করেন।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে দায়িত্ব পালনের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, গণ-অভ্যুত্থান দিবস আমাদের মুক্তিসংগ্রাম ও স্বাধিকার আন্দোলনের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে।
আরও পড়ুন- করোনায় আক্রান্ত বন্ধু, পরীক্ষায় অংশ নিলেন না ১৩৪ জন
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণ করে উন্নত, সমৃদ্ধ ও শান্তিপ্রিয় আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায়। বাহান্নর ভাষা আন্দোলন, বাঙালির মুক্তি সনদ ৬ দফা, পরবর্তীকালে ১১ দফা ও ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছি মহান স্বাধীনতা। পেয়েছি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ।’
এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শহীদ মতিউর স্মৃতিসৌধে (নবকুমার ইনস্টিটিউট, বকশীবাজার, ঢাকা) শ্রদ্ধাঞ্জলি এবং আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।