আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর যে ছবি ঘুরছে ফেসবুকে
নির্বাচনী এলাকা শেরপুর থেকে পাবলিক বাসে ঢাকায় ফিরেন কৃষি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি। বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) বিকেল ৪টায় জেলার নকলা থেকে লোকাল বাস সোনার বাংলা পরিবহনে তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন।
এ সময় নেতাকর্মীরা তাদের প্রিয় নেত্রীকে বিদায় জানাতে এসে মোবাইল ফোনে কেউ একজন ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করলে পরে ছবিটি ভাইরাল হয়। দলীয় নেতাকর্মীসহ অনেকেই ছবিটি ফেসবুকে শেয়ার করে প্রশংসা করেন এবং স্যালুট জানান মতিয়া চৌধুরীকে।
জানা যায়, শেরপুরের নির্বাচনী এলাকা নালিতাবাড়ী ও নকলা উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থী, দরিদ্র অসহায় শীতার্ত মানুষ ও বিভিন্ন ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে কম্বল বিতরণের পর বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) বিকেল ৪টায় নকলা পৌরশহর থেকে ঢাকার উদ্দেশে সোনার বাংলা নামের বাসে ওঠেন তিনি।
মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগের বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য। এছাড়াও তিনি তিন দফায় শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসন থেকে নির্বাচিত এমপি। তবে এবার মন্ত্রিপরিষদে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় কৃষি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। কিন্তু এ দায়িত্বে সরকারি কোনো গাড়ি বরাদ্দ না থাকায় তিনি তার গানম্যান রেজাউল করিম ও ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) শাহজালালকে নিয়ে ঢাকা থেকে নকলা যাতায়াত করেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার রাতে মতিয়া চৌধুরী বাসে করে নকলায় তার নিজ বাসভবনে পৌঁছান। এরপর গত ৫ জানুয়ারি বুধবার উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসার এবতেদায়ী শাখার সেরা ১০ মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন।
ওইদিন নকলার ৫টি ইউনিয়নের ৪৯টি প্রতিষ্ঠানের ৪৯০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ওইসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। এছাড়াও (৫ জানুয়ারি) উপজেলার উরফা ইউনিয়নের মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের মাঝেও কম্বল বিতরণ করেন তিনি।
পাশাপাশি সাবেক মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) নালিতাবাড়ীতে ৩ হাজার ৪৫০টি কম্বল বিতরণ করেন। এদিন উপজেলার বাঘবেড়, কলসপাড়, নন্নী, পোঁড়াগড়, নয়াবিল, রাজনগর ও পৌরসভার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসার এবতেদায়ী শাখার সেরা ১০ মেধাবী শিক্ষার্থী ও মসজিদের ইমাম এবং মুয়াজ্জিনদের মাঝেও কম্বল বিতরণ করেন তিনি।
এদিকে, বাসে জানালার পাশে বসা মতিয়া চৌধুরীর ছবিটি ফেসবুকজুড়ে ঘুরছে। সেটি নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট দিয়ে বিশিষ্ট সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল লিখেছেন, মতিয়া আপার বাসায় একবার আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তার রাজনৈতিক দর্শন বা ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে কথা হতেই পারে। কিন্তু তার সততা সাদামাটা জীবন এগুলো নিয়ে মুগ্ধ হওয়া ছাড়া উপায় নেই। আর এ সাধারণ জীবনযাপনই তাকে অসাধারণ করে তুলেছে। জানি বিলাসী জীবনযাপন করা রাজনীতিবিদরা তাদের কাছ থেকে কিছু শিখবে না। সৈয়দ আশরাফ, মতিয়া চৌধুরীদের জন্য তাই আজীবন ভালোবাসা।
ছবিটি শেয়ার করে প্রথম আলোর সাবেক সাংবাদিক শরীফুল হাসান লিখেছেন, পাবলিক বাসে চড়ে ঢাকায় ফিরছেন মতিয়া চৌধুরী। এজন্যই তিনি ব্যতিক্রম। নালিতাবাড়ী ও নকলা উপজেলায় মেধাবী শিক্ষার্থী, দরিদ্র অসহায় শীতার্ত মানুষ ও বিভিন্ন ধর্মীয় নেতাদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ শেষে পাবলিক বাসে চড়ে ঢাকায় ফিরছেন বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, তিনি কৃষিমন্ত্রনালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটিরও প্রধান, প্রাক্তন মন্ত্রী। কিন্তু জীবন যাপন খুব সাধারণ।
“মতিয়া আপার বাসায় একবার আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তার রাজনৈতিক দর্শন বা ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে কথা হতেই পারে। কিন্তু তার সততা সাদামাটা জীবন এগুলো নিয়ে মুগ্ধ হওয়া ছাড়া উপায় নেই। আর এই সাধারণ জীবনযাপনই তাকে অসাধারণ করে তুলেছে। জানি বিলাসী জীবন যাপন করা রাজনীতিবিদরা তাদের কাছ থেকে কিছু শিখবে না। সৈয়দ আশরাফ, মতিয়া চৌধুরীদের জন্য তাই আজীবন ভালোবাসা।”