দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত সোহাগীর
বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েও অর্থের অভাবে ভর্তি হতে পারছেন না বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার সোহাগী। কলেজ থেকে গোটা গ্রাম যখন তার সাফল্যে খুশিতে ভাসছে তখন সোহাগী কিছুটা বিভ্রান্ত। সামনের পড়ার খরচ জোটাবেন কেমন করে সেই দুঃশ্চিন্তায় রাতে ঘুম নেই সোহাগী ও তার পরিবারের।
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার চৌধুরী আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী সোহাগী এ বছর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। তিনি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধা তালিকায় পঞ্চমতম স্থান ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬তম স্থান অর্জন করেছেন।
আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপকের বেতন ১৫ হাজার, প্রভাষকের ১০ হাজার টাকা!
বাবা উপজেলার পলিপাড়া মহল্লার ছফির উদ্দিন অটোরিকশা চালান। মা জাহেরা বেগম গৃহিণী। সোহাগী ছয় ভাই-বোনের মধ্যে পঞ্চমতম। অভাবী এ পরিবারে দিন আনে দিন খায় অবস্থা। শুধু অটোরিকশা চালিয়ে কতইবা আর আয় হয়। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারের মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় এখন চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন পরিবার।
অভাব-অনটন সোহাগীর মেধাশক্তিকে দাবিয়ে রাখতে না পারলেও অর্থের অভাবে উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পথ রুদ্ধ হতে বসেছে সোহাগীর। দরিদ্রতার কাছে শেষ পর্যন্ত হার মেনে নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ফ্যাকাসে হয়ে পড়বে এমন আশঙ্কায় দিন কাটছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষকের কাছে পরাজিত হলেন ছাত্র!
সোহাগী বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার খুব ইচ্ছা আমি মাস্টার্স পাস করে সরকারি চাকরি করব। এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষের সহযোগিতায় আমি পড়াশোনা চালিয়ে এত দূর এসেছি। এবারের গুচ্ছ পদ্ধতির বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় আমি সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধা তালিকায় পঞ্চমতম স্থান ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬তম স্থান অর্জন করেছি। আমার ইচ্ছে, আমি সিলেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব।
সোহাগী আরও জানান, জানুয়ারির মধ্যে মৌখিক পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। কিন্তু তার পরিবারের যা আর্থিক অবস্থা, তাতে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন। সিলেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে যাওয়া আসা- মিলে অন্তত ২০ হাজার টাকা দরকার। অথচ তার কাছে কোনও টাকাই নেই। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও পড়াশোনার জন্য কেউ যদি পাশে দাঁড়াতেন, তাহলে তিনি পড়াশোনাটা চালিয়ে যেতে পারতেন।
আরও পড়ুন: সুরক্ষা অ্যাপে বুস্টার ডোজ শুরু কাল, পাবেন যারা
এদিকে তার এই অস্বচ্ছলতার খবর শুনে গত রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে কুলসুম সম্পা ও মেয়র তৌহিদুর রহমান মানিক তাকে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। এখন তার আরও কিছু সহযোগিতা প্রয়োজন।