বাসায় বসে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন পৌর মেয়র!
নিজ বাড়িতে এইচএসসি পরীক্ষার খাতা এতে পরীক্ষা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে। ওই মেয়র উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় অধীনে বরগুনার আমতলী সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
অভিযুক্ত পৌর মেয়রের নাম মতিয়ার রহমান। গত শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) নিজ বাসায় পরীক্ষার খাতা এনে পরীক্ষা দেওয়ার এমন অভিযোগ ওঠে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বাসায় বসে মেয়র মতিউর রহমানের পরীক্ষা দেওয়ার খবর জানাজানি হয়ে পড়ে। পরে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির নেতৃত্বে দলীয় নেতা-কর্মীদের একটি দল আমতলী সরকারি ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে মেয়রকে দেখতে না পেয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে যায়। আমতলী সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ প্রথমে তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানালেও স্থানীয় সাংবাদিকেরা উপস্থিত হলে মেয়রের বাসায় বসে পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।
আরও পড়ুন: বছরজুড়েই ছিল ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন, বিড়ম্বনা বাড়িয়েছে ‘গুচ্ছ’
এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. মোয়াজ্জেম খান বলেন, ‘খবর পাই মেয়র মতিউর রহমান তাঁর বাসায় বসে আমতলী সরকারি ডিগ্রি কলেজে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। এই খবর পেয়ে আমরা সঙ্গে সঙ্গে কলেজে পরীক্ষাকেন্দ্রের হলরুমে গিয়ে পরীক্ষার হলের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের কাছে তাঁর বিষয়ে জানতে চাই। তখন তাঁরা বলেন, এ নামে কেউ রেজিস্ট্রেশন করেন নাই আবার পরীক্ষা দেবে কীভাবে। পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে অধ্যক্ষ হোসেন আহমদ সাহেবের কাছে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি তথ্য দিতে চাননি। পরে কাগজপত্র দেখে তিনি মেয়র মতিউর রহমানের হাজিরা খাতায় আমাদের সামনে অনুপস্থিত লিখে দেন।’
এ বিষয়ে জানতে চইলে মতিউর রহমান বলেন, ‘ঘটনার দিন আমি ঢাকা থেকে এসেছি। ঢাকা থেকে আসার কারণে আমি পরীক্ষা হলে যাইনি। তবে আমি বাড়ি থেকেও পরীক্ষায় অংশ নিইনি।’
আরও পড়ুন: জন্মদিনের কেক কাটতে গিয়ে ছাত্রলীগের দুপক্ষে সংঘর্ষ
এ নিয়ে অধ্যক্ষ হোসেন আহমদ বলেন, ‘প্রথমে যখন তাঁরা আমার কাছে জানতে চেয়েছেন, তখন আমার জানা ছিল না যে মেয়র মহোদয় আমার এখান থেকে রেজিস্ট্রেশন করছেন। পরে কাগজপত্র যাচাই করে তাঁদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে তিনি বাসায় খাতা নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন এ রকম কোনো প্রমাণ পাইনি।’
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বরগুনার উপ-আঞ্চলিক পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন পাইক বলেন, ‘এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আমি খোঁজ নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত নই। খোঁজ নিয়ে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’