দেশে ২৪.৩ শতাংশ মানুষ দরিদ্র
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের সাফল্য উল্লেখযোগ্য হলেও দেশের ২৪.৩ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন।
বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৩ কোটি ৯২ লাখ মানুষ ‘বহুমাত্রিক’ দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছেন। যা মোট জনসংখ্যার ২৪.১ শতাংশ। এ ধরনের দারিদ্র্যের কারণেই মোট জনসংখ্যার ২৪.৩ শতাংশ মানুষ রয়েছেন দারিদ্র্যসীমার নিচে। তবে, বহুমাত্রিক দারিদ্রতার হার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য অর্জনের মাত্রা বেশ ভালো।
মঙ্গবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে ‘দ্য ২০২১ গ্লোবাল মাল্টিডাইমেনশনাল পোভার্টি ইন্ডেক্স (এমপিআই)’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে 'বহুমাত্রিক' দরিদ্র বলতে বোঝানো হয়েছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার মানদণ্ডে একটি পরিবারের সার্বিক পরিস্থিতি। এ তিনটি বিষয়ে মোট দশটি সূচক রয়েছে। যদি কোনো পরিবারে দশটি সূচকের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ঘাটতি থাকে, তাহলে তাকে বহুমাত্রিক দরিদ্রতার শিকার বা গরিব পরিবার বলে বিবেচনা করা হবে।
সানেম’র গবেষণা পরিচালক ড সায়েম হক বিদিশা বলেন, দারিদ্র্য পরিমাপের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। আমাদের দেশে সাধারণত মানুষের আয়ের পরিবর্তন দিয়েই দরিদ্রতার হার নির্ধারণ করা হয়। এতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টিগ্রহণের হার ও জীবনযাত্রার মান যথাযথভাবে বোঝা যায় না। দারিদ্রতার মাত্রাগুলো প্রকাশ পায় না।
বাংলাদেশের ‘বহুমাত্রিক’ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ১০টি মানদণ্ডের মধ্যে স্কুলে ভর্তির হার ২৫.৩ শতাংশ, স্কুলে উপস্থিতির হার ৯.৫ শতাংশ, যা আরও কম। দারিদ্র্য জনগোষ্ঠীর শিশুমৃত্যুর হার ১.৩ শতাংশ ও পুষ্টি গ্রহণের হার ৮.৭ শতাংশ।
এর মধ্যে ৪.৬ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ ও ১.৪ শতাংশ মানুষ নিরাপদ পানি সুবিধা পেয়ে থাকেন। পাশাপাশি দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর ২২.৮ শতাংশ রান্নার কাজে জ্বালানি তেল বা গ্যাস ব্যবহার করেন, ১৫.৩ শতাংশ স্যানিটেসশন সুবিধা পায় ও ১৫.৯ শতাংশের কিছু পরিমাণে সম্পদ রয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ১২ শতাংশ ছাত্র 'বহুমাত্রিক' দরিদ্র পরিবেশে বসবাস করছে। এই জনগোষ্ঠীর প্রায় সবাই স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে।