আইনি পদক্ষেপ শুরুর মধ্যেই দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মুরাদ
পদত্যাগ করা সমালোচিত তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর মাঝেই তিনি দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। বিদেশে পাড়ি জমাতে ইতমধ্যে মুরাদ বিমানের টিকিটও নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (০৯ ডিসেম্বর) সকালে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনস সূত্রে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ মুরাদ হাসান বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি আজ বৃহস্পতিবার রাতে কানাডায় যাওয়ার জন্য টিকিট কেটেছেন। গতকাল বুধবার তিনি এ টিকিট কেটেছেন।
সদ্য সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় মুরাদ হাসানের যে লাল পাসপোর্ট (বিশেষ পাসপোর্ট) ছিল, সেটি পদত্যাগের দিন গত মঙ্গলবার তাঁর কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, দেশে মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বুধবার মুরাদ হাসানের বিষয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ আবেদনকারী হয়ে রিটটি করেন। তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।
রিটে আবেদনের প্রার্থনায় দেখা যায়, জামালপুর-৪ আসনের সাংসদ মুরাদ হাসানের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বিচারিক অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং তাঁর আসন (জামালপুর-৪) শূন্য ঘোষণায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না— এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া রিটে তাঁর সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও টেলিফোন সংলাপ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়েও রুল চাওয়া হয়। রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় মুরাদ হাসানের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বিচারিক তদন্তে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকেও মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানানো হয়েছে। মুরাদ হাসান খালেদা জিয়া, তারেক রহমান এবং জিয়া পরিবারের সদস্যদের প্রতি অশালীন মন্তব্যের অভিযোগ এনে আইনি পদক্ষেপের কথা জানানো হয়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশালীন ও শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্যের জেরে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অনলাইন প্ল্যাটফর্মসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুরাদ হাসানের অশ্লীল-কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের ৩৮৭টি লিঙ্ক চিহ্নিত করেছে বিটিআরসি। এর মধ্যে ফেসবুকে ২৭২টি ও ইউটিউবে ১১৫টি লিঙ্ক চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব লিংক অপসারণ করতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেছে সংস্থাটি।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এসব তথ্য তুলে ধরেন বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই রাকিব। তিনি বলেন, চিহ্নিত হওয়া লিঙ্কগুলোর মধ্যে ফেসবুক ১৫টি ও ইউটিউব ২টি লিঙ্ক অপসারণ করেছে।