মাছির কারণে মৃত্যু ৪ বাঘ শাবকের
মাছিবাহিত রোগের কারণে মারা গেছে ৪টি বাঘের শাবক। ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত জাতীয় চিড়িয়াখানায় ঘটছে এই ঘটনা।
সম্প্রতি পরপর দুইদিনে দুর্জয় ও অবন্তিকা নামক দুটি বাঘের শাবকের মৃত্যু হয়েছে। তারও আগে ২০১৬ সালে টোকিও ও মৈত্রী নামের আরও দুটি বাঘ শাবকের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর কারণ মাছিবাহিত একটি রোগ। যার নাম ট্রাইপেনোসোমা।
রোগটি সম্পর্কে কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেছেন, 'সেটসি ফ্লাই নামক এক ধরনের মাছি থেকে ছড়ায় এই রোগটি। রোগটি নিয়ে দেশে কোনো গবেষণা না থাকার পাশাপাশি সচেতনতারও অভাব রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।'
তিনি বলেন, 'এই রোগ প্রতিরোধে এর ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ করাই কার্যকর সমাধান। তিনভাবে এর ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সেগুলো হলো—ধোঁয়া বা কেরোসিনের মাধ্যমে রিপ্লেন্ট করা, লার্ভি সাইট এবং অ্যাডাল্টি সাইট প্রয়োগ করা।'
এসময় তিনি মত দিয়েছেন, চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের নিজস্ব পেস্ট কন্ট্রোল পদ্ধতি না থাকলে সেখানে বাঘের শাবককে বাঁচানো কঠিন হবে।
অন্যদিকে, শাবক দুটির মৃত্যুর বিষয়ে জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ডা. আব্দুল লতিফ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, 'গত ১৭ নভেম্বর শাবক দুটি অসুস্থ হলে তাদের দ্রুত আলাদা করার পর রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য জরুরিভিত্তিতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। এরপর রক্ত পরীক্ষায় তাদের শরীরে একধরনের মাছিবাহিত পরজীবীর উপস্থিতি ধরা পড়ে।'
সাধ্য মতো চিকিৎসা দিয়েও তাদের বাঁচানো যায়নি উল্লেখ করে তিনি জানিয়েছেন, ‘সাধারণত এ ধরনের রোগের চিকিৎসার জন্য অন্য কোথাও নিতে হয় না। কেননা এই ঘটনায় আমরা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে মেডিকেল বোর্ড পর্যন্ত গঠন করেছিলাম।'
তিনি আরও বলেছেন, ভবিষ্যতে যাতে মাছির কারণে আর কোনো শাবকের মৃত্যু না হয় সে জন্য আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি।
এদিকে, এসব মৃত্যুর ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। আগামী রবিবার তদন্ত প্রতিবেদনটি জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।