প্রকাশ্যে ‘ধর্ষণের হুমকি, বদরুন্নেসার শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ
বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ  © টিডিসি ফটো

বাসে হাফ ভাড়া দিতে চাওয়ায় এক নারী শিক্ষার্থীকে বাসের হেলপার ধর্ষণের হুমকি দেয়ার ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে রাজধানীর বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা। রোববার (২১ নভেম্বর)  চানখারপুর এলাকায় কলেজের সামনের সড়কটি অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। সকাল ৯টার দিকে তারা সড়ক বন্ধ করে দেওয়ার পর কলেজ প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ভেতরে নিয়ে তালাবন্ধ করে দেয়। এরপর ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তালা ভেঙে পুনরায় সড়ক অবরোধ করে।

বর্তমানে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শিক্ষকদের বাধার মুখে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ ছেড়ে এখনো রাজপথে বের হতে পারেনি। তবে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, তারা তাদের দাবি আদায়ে অনড়। তারা এই ঘটনার বিচার চায়। 

এ বিষয়ে বদরুন্নেসা সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিকুন নাহার বলেন, কলেজের একজন শিক্ষক ফোনে আমাকে ছাত্রী হেনস্তার বিষয়টি জানিয়েছেন। তারা কলেজ প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছে। আমরা চাইনা তারা ঝামেলা করুক। আমরা ঠিকানা বাসের মালিককে আসতে বলেছি। এটা কলেজের কোনো ঝামেলা না। বাইরের বিষয়। আমরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। বাইরে থেকে কেউ আমাদের কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রভাবিত করছে বলে ধারণা করছি।

জানতে চাইলে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ছাত্রী হেনস্তার বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। এ বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। খোঁজ নিয়ে দেখছি।

শিক্ষার্থীরা বলেন, কলেজের এক শিক্ষার্থী ঠিকানা এক্সপ্রেস লিমিটেডের বাসে হাফ ভাড়া দেওয়ায় ওই গাড়ির হেলপার বাস থেকে নামার সময় তাকে ধর্ষণের হুমকি দেয়। তবে বাসটি দ্রুত চলে যাওয়ায় সে ওই গাড়ির হেলপারের নাম জানতে বা গাড়ির নম্বর লিখে নিতে পারেনি সেই ছাত্রী।

এই ঘটনা নিয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী গতকাল শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছে। সেখানে সে লিখেছে, ‘আমার বাসা শনির আখড়া। এখান থেকে (বকশী বাজার এলাকা) কলেজের ভাড়া ১০ টাকা, প্রতিদিন ১০ টাকা দিয়েই যাচ্ছি। আজকে কলেজে যাওয়ার সময় ঠিকানা বাসে করে গিয়েছিলাম। তো আজকে হেলপারকে ২০ টাকার নোট দিলে সে ভাড়া রাখছে ১৫ টাকা। আমি তাকে ভালো করেই বলছিলাম আমার ১০ টাকা ফেরত দিতে, বাট সে দেয় তো নাই উল্টা বলে ‘দিমু না কী করবি কর’। এরপর চিল্লানোর পর সে বলে ‘গলা বড় করবি না, পাঁচ টাকা নে না হয় নাইমা যা।’

‘বাসের একটা মানুষও তাকে একটা কথাও বলে নাই। কেউ কিচ্ছু বলে নাই। ইভেন একটা পুলিশও ছিল, সেও কিছুই বলে নাই। এরপর নামার সময় পাঁচ টাকা হাতে ধরায় দিয়ে বলে “নে তোর টাকা, প্রতিদিনি তো আসবি একদিন ধইরা ... কোথাকার”। এই কথা যখন বলছে বাস অলরেডি রানিংয়ে, আমি তাকে কিছু বলার সু্যোগও পাইনি আর বাসের নম্বর নোট করারও সুযোগ পাইনি। জোরে বাস টেনে চলে গেছে।’


সর্বশেষ সংবাদ