পেকুয়ার মগনামা আদর্শ শিক্ষা নিকেতন

এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি ১৯ শিক্ষার্থী

মগনামা আদর্শ শিক্ষা নিকেতন।
মগনামা আদর্শ শিক্ষা নিকেতন।  © সংগৃহীত

কক্সবাজারের পেকুয়ার মগনামা আদর্শ শিক্ষা নিকেতন থেকে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল ১৯ জন। তাদের রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ সবকিছু হয়েছে। প্রস্তুতিও নিয়েছে সবাই। কিন্তু পরীক্ষার আগের দিন শিক্ষার্থীরা স্কুলে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে গিয়ে জানতে পারেন তাদের প্রবেশপত্র আসেনি।

এই ১৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬ জন ছাত্র ও ১৩ জন ছাত্রী। সবাই মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। মানবিক বিভাগের পরীক্ষা শুরু হয়েছে গত সোমবার (১৫ নভেম্বর) থেকে।

শিক্ষার্থীরা কেন প্রবেশপত্র আসেনি এর কারণ খুঁজতে গিয়ে জানতে পারেন প্রধান শিক্ষক তাদের ফরম ফিলআপের সব টাকা নিলেও ফরম ফিলআপই করেননি। পরবর্তীতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করলে আরও জানতে পারে তাদের ৯ম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশনই করেননি ওই শিক্ষক। এই কাজটি করেছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মাসুদ বিন আবদুল জলিল।

জানা যায়, স্কুলটি নিবন্ধিত না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের শুধু পাঠদান করা হয় এবং নিবন্ধিত একটি স্কুলের নামে রেজিস্ট্রেশন, ফরম ফিলআপ করে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে থাকে।

পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারা শিক্ষার্থী মো. রাকিব জানান, ‘আমরা গত কয়েকদিন ধরে প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করছিলাম যে আমাদের এডমিট কার্ড এসেছে কি না। তিনি বলেন- আসবে, তোমরা পড়ালেখা কর। এডমিট নিয়ে চিন্তা করিও না, কিন্তু রবিবার যখন স্কুলে গেলাম তখন তিনি আমাদেরকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখে বাড়িতে চলে যেতে বলেন। যখন সোমবার দেখা করলাম তখন বললেন তোমরা পরিস্থিতির শিকার, তোমরা ২০২২ সালের এপ্রিলে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।’

মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় প্রধান শিক্ষক মাসুদ বিন আবদুল জলিলের বক্তব্য নেয়া য়ায়নি।

পেকুয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের একাডেমিক সুপারভাইজার উলফাত জাহান বলেন, মগনামা আদর্শ শিক্ষা নিকেতনের ১৯ শিক্ষার্থী এসে তাদের এডমিট না পাবার বিষয়টি জানালে আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, তাদের ফরম ফিলাপ তো দূরের কথা ৯ম শ্রেণীর রেজিস্ট্রেশন পর্যন্ত হয়নি। তাদের শুধু ২ বছর ধরে ক্লাস নেয়া হয়েছে। এই ১৯ শিক্ষার্থীর জীবন থেকে ২টি বছর হারিয়ে যাবে। স্কুলটি অনিবন্ধিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আমাদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়ার কোনো সুযোগও নেই। 

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা বলেন, ওই শিক্ষকের কারণে ১৯ জন শিক্ষার্থীর জীবন থেকে ২টি বছর নষ্ট হয়ে গেল। তিনি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

একজন অভিভাবক ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগে দিয়েছেন। ইতোমধ্যেই মামলা রুজু করা হয়েছে। অবশ্যই শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা ওই শিক্ষককে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান, পেকুয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী।


সর্বশেষ সংবাদ