অক্সিজেন মাস্ক খুলে নেওয়া সেই ওয়ার্ডবয় গ্রেফতার

আটক আসাদুজ্জামান মীর ধলু
আটক আসাদুজ্জামান মীর ধলু  © সংগৃহীত

বগুড়ায় বকশিস কম পেয়ে অক্সিজেন মাস্ক খুলে নেওয়ায় এক স্কুলছাত্র নিহতের ঘটনায় অভিযুক্ত হাসপাতাল কর্মচারী আসাদুজ্জামান মীর ধলুকে (৪০) ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) ভোরে র‌্যাব- ১২ বগুড়া স্পেশাল কোম্পানীর একটি দল ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে তাকে আটক করে। 

র‌্যাব- ১২ এর কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার সোহরাব হোসেন জানান, দায়িত্বে অবহেলা করা বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শজিমেক) খণ্ডকালীন ওই কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে। ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত বলা হবে। 

গত মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) রাতে শজিমেক হাসপাতালে ৫০ টাকা বকশিস কম দেওয়ায় অক্সিজেন মাস্ক খুলে নেন কর্মচারী আসাদুজ্জামান মীর ধলু। এতে অক্সিজেন না পেয়ে মারা যায় বিকাশ চন্দ্র (১৭) নামে এক স্কুলছাত্র। এ ঘটনা জানাজানি হলে আনসারদের সহযোগিতায় পালিয়ে যায় আসাদুজ্জামান দুলু।

         আরও পড়ুন: কম বকশিস পেয়ে খুলে ফেলা হলো অক্সিজেন মাস্ক, স্কুলছাত্রের মৃত্যু

মৃত বিকাশ চন্দ্র গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পুটিমারি গ্রামের বিশু চন্দ্র কর্মকারের ছেলে এবং স্থানীয় খামার ধনারুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

বিকাশের কাকা শচীন চন্দ্র কর্মকার বলেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কার্যক্রম শেষ করে অক্সিজেনসহ রোগী বিকাশকে তৃতীয় তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের দুলু নামে এক কর্মচারী রোগীকে ট্রলিতে করে বেডে পৌঁছে দেওয়ার পর ২০০ টাকা বকশিস দাবি করেন। এসময় বিকাশের বাবা ১৫০ টাকা দেন। তাদের কাছে আর কোনো টাকা না থাকার কথা জানালে কর্মচারী দুলু রোগীর মুখ থেকে অক্সিজেন মাক্স খুলে দেয়। এতে ৫ মিনিটের মধ্যে বিকাশ শ্বাসকষ্টে মারা যায়। এসময় অন্যান্য রোগীর লোকজন ওই কর্মচারীর ওপর চড়াও হলে হাসপাতালে কর্মরত আনসারদের সহায়তায় পালিয়ে যান দুলু।

শচীন চন্দ্র জানান, সংসারে টানাপড়েনের কারণে বিকাশ লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি ওয়ার্কশপে কাজ করত। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বাইসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বিকাশ মাথায় গুরুতর আঘাত পান। তাকে সাঘাটা উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত ১০টায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন,  দুলু কোন সরকারি কর্মচারী নন। মাঝে মাঝে সেখানে ডিউটি করত। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে সে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা প্রহণ করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ