০৯ অক্টোবর ২০২১, ১১:৩৫

সেই ৩ কলেজছাত্রী আদালতে জবানবন্দি দেবেন আজ

  © সংগৃহীত

রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর উদ্ধার হওয়া ৩ কলেজছাত্রী আদালতে জবানবন্দি দেবেন আজ। তারা এখন তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছেন। শুক্রবার (৮ অক্টোবর) এ তথ্য জানিয়েছেন পল্লবী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পারভেজ।

আজ শনিবার আদালতে তাদের জবানবন্দির উপর নির্ভর করবে ওই মামলায় গ্রেফতার চার আসামির ভবিষ্যৎ। যদি ৩ কলেজছাত্রী জাপান যাওয়ার প্রলোভনের সাথে ওই আসামিদের সম্পৃক্ততার কথা জানান ভিকটিমরা। তবে আসামিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন ও মানবপাচার আইনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে। কিন্তু ভিকটিমরা যদি তাদের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ না তোলেন তাহলে জামিন পাবেন গ্রেফতার চার আসামি।

এই বিষয় অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পারভেজ বলেছেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পল্লবী থেকে নিখোঁজ হওয়া তিন কলেজছাত্রীকে ৬ অক্টোবর র‌্যাব উদ্ধার করার পর তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়। শনিবার আদালতে পাঠানো হবে। আদালতে তাদের জবানবন্দির পর পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হতে পারে ওই তিন বান্ধবীকে।

ওসি আরো জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে মামলায় গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে এ ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বা চার্জশিট দেয়ার ক্ষেত্রে ভিকটিমদের আদালতে জবানবন্দি উপর নির্ভর করবে।

নিখোঁজ ছাত্রীদের পরিবার প্রথম থেকে দাবি করে আসছিলেন, বিদেশে নেয়ার প্রলোভনে তাদেরকে নিয়ে গেছে একটি নারী পাচারকারী চক্র। এ জন্য তারা বাসা থেকে অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়েছে। এ ঘটনায় নিসার মা মাহমুদা আক্তার পল্লবী থানায় অপহরণ মামলা করেন। মামলার পর এক তরুণীসহ চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার চারজনের মধ্যে দুজন সহদোর। এ ছাড়া তাদের মধ্যে এক তরুণীও রয়েছেন। গ্রেফতার দুই ভাই হলেন- তরিকুল্লাহ (১৯) ও তার বড় ভাই রকিবুল্লাহ (২০)। বাকি দুজনের বয়স ১৮ বছর। বর্তমানে তারা কারাগারে আছেন।

অবশ্য ৬ অক্টোবর তাদেরকে উদ্ধারের পর সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৪ জানায়, ওই তিন ছাত্রী করোনার কারণে দীর্ঘদিন কলেজ বন্ধ থাকায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। দিন দিন লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এর ফলে তাদের পরিবার পড়াশোনা ও ধর্মীয় বিধান মেনে চলার জন্য চাপ দিত। অতিরিক্ত পারিবারিক বিধিনিষেধের কারণে বিরক্ত হয়ে পড়ে ওই ছাত্রীরা।

তাদের শিকারোক্তির বরাত দিয়ে র‌্যাব আরো জানায়, ওই তিন ছাত্রী স্বেচ্ছায় বাড়ি ছাড়েন। তারা চুল কেটে ছোট করে ছদ্মবেশ ধারণ করে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছিলেন। তারা কক্সবাজারও গিয়েছিলেন।

ওই তিন কলেজছাত্রী হলেন- কাজী দিলখুশ জান্নাত নিসা, কানিজ ফাতেমা ও স্নেহা আক্তার। তারা সবাই দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। এর মধ্যে নিসা মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউট, স্নেহা পল্লবী ডিগ্রি কলেজ ও কানিজ দুয়ারিপাড়া কলেজের শিক্ষার্থী। রাজধানীর পল্লবীর কলেজপড়ুয়া এই তিন বান্ধবী ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টার দিকে বাসা থেকে টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও শিক্ষাসনদ নিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন। সাত দিন পর মিরপুরের বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে ৬ অক্টোবর ভোরে তাদেরকে উদ্ধার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।