০৫ অক্টোবর ২০২১, ১৪:৩৪

তিন বছরের প্রকল্পে নয় বছর, অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার সুপারিশ

ভবন নির্মাণ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করছে আইএমইডি তদন্ত দল  © সংগৃহীত

কথা ছিল ২০১২ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে কাজ শেষ হবে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু নয় বছর পার হয়ে গেলেও এখনও শেষ হয়নি কুষ্টিয়া মেডিকেল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। উরপন্তু প্রকল্পের পদে পদে উঠে এসেছে অনিয়মের অভিযোগ। তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তদন্ত শেষে ওই প্রকল্পের পরিচালক ও গণপূর্তের প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।

গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় নয় বছরেও শেষ করতে না পারা এই প্রকল্পের মেয়াদ আরও চার বছর বাড়ানোর প্রস্তাব তোলা হয়। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসন্তোষ জানিয়ে তা ফেরত পাঠিয়ে দেন। একই সাথে প্রকল্পটির বিলম্বের কারণ এবং অনিয়মের অভিযোগ তদন্তেরও নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে করে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে, যেখানে অনিয়মের সাথে জড়িতদের শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশে বলা হয়েছে, অভিযোগসমূহ প্রমাণিত হওয়ায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া যেতে পারে। একই সাথে অতীব জরুরি জনআগ্রহপূর্ণ এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত নতুন জনবল দিয়ে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এই বিষয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আইএমইডি সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেছেন, এরকম একটি জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের বাস্তবায়ন পর্যায়ে এরকম বিশৃংখল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার জন্য কারা কীভাবে জড়িত তা আমরা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর চার সদস্যের কমিটি করে সরেজমিন ও বিভাগীয় পর্যায়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

ওই প্রতিবেদনটি আজ মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) অনুষ্ঠেয় একনেক সভায় উপস্থাপন করা হতে পারে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, অনিয়মের জন্য ইতোমধ্যেই চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে একজনকে ওএসডি এবং দুজনের বিরুদ্ধে বিভাগী মামলা হয়েছে। অপর একজন অবসরে যাওয়ায় সে অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আরও একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

২০১৯ সাল থেকে প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। এছাড়া প্রকল্প সংশ্লিষ্ট অন্যদের বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার জানান, অনিয়মের বিষয়ে আইএমইডির প্রতিবেদন তারা পেয়েছেন। ইতোমধ্যে আমরা দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছেন তারা।

২০১২ সালের ৩ মার্চ একনেকে অনুমোদন পায় ২৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ের কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রকল্পটি। তিন বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও তা হয়নি।