নেদারল্যান্ডস আর যাওয়া হলো না জিতুর
পড়াশোনা শেষ করেছন দুই বছর আগে। এরপর চাকরির জন্য পড়ালেখা শুরু করেছিলেন। থাকতেন ঢাকার তেজগাঁওয়ের পূর্ব তেজতুরী বাজার এলাকার একটি মেসে। দুইবার বিসিএস দিলেও সাফল্য আসেনি। তাতে দমে না গিয়ে নিচ্ছিলেন তৃতীয়বারের মতো প্রস্তুতি। পাশাপাশি নিচ্ছিলেন নেদারল্যান্ডস যাওয়ার প্রস্তুতি। কাগজপত্রও চলে এসেছিল। কিন্তু নেদারল্যান্ডস আর যাওয়া হলো না ঢাকা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী জিতুর।
শুক্রবার রাত ৯টার দিকে ঘটা বিস্ফোরণে গুরুতর দগ্ধ হন জিতু (২৮) ও তার বন্ধু ইয়াসিন তালুকদার। পরে শনিবার (২ অক্টোবর) ভোররাত সাড়ে ৩টায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
জিতুর শরীরের ৬৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসক আইউব হোসেন। আর প্রায় একই পরিমাণ দগ্ধ তার বন্ধু ইয়াসিনের চিকিৎসা এখনও চলছে।
পুলিশ জানিয়েছে, যে বাসায় জিতু থাকতেন সেই বাসায় গ্যাস লিকেজ ছিল। সিগারেট ধরাতে গেলে বিস্ফোরণ হয়। মৃত্যুর আগে জিতুও নাকি এ কথা জানিয়েছিল।
এ বিষয়ে তেজগাঁও জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. শহীদুল্লাহ বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ছয়তলা ভবনের তৃতীয় তলার যে কক্ষে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে তা তন্নতন্ন করে খোঁজ করি। তবে সেখানে বিস্ফোরকের তেমন কোনো আলামত মেলেনি। ধারণা করা হচ্ছে গ্যাস থেকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে।
যে কক্ষে দুই শিক্ষার্থী থাকতো সেখানে গ্যাসের চুলা রয়েছে। বদ্ধ ঘরে গ্যাস আবদ্ধ হতে পারে। গ্যাস বের হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও ছিল না। অসাবধানতাবশত এ সময় হয়তো সিগারেট কিংবা অন্য কোনো কিছু জ্বালাতে গেলে বিস্ফোরণ ঘটে।
এমনটি আমরা প্রাথমিকভাবে পেয়েছি। তবে তদন্তের পরই এ বিষয়ে আরও নিশ্চিত ধারণা পাওয়া যাবে, বলেন উপ-পুলিশ কমিশনার শহীদুল্লাহ।
জিতুর বাড়ি পাবনা জেলার আতাইকুলা থানার গঙ্গারামপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আহসাদুল ইসলাম।
জিতুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবারে। জিতুর বোন জামাই গিয়াসউদ্দিন বলেন, সবার আদরের জিতুকে হারিয়ে তার পরিবারের লোকদের কান্না সহ্য করার মতো নয়।