৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২২:১৭

গ্রেপ্তার হতে পারেন নাসির, ৭ বছর জেল হতে পারে তামিমার!

গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিয়ে করেছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটার নাসির হোসেন। এবার সেই বিয়ে নিয়ে বিপাকে পড়লেন তিনি  © ফাইল ফটো

ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা তাম্মীকে হাজির হতে সমন জারি করেছেন আদালত। তাদের উপস্থিতিতে আগামী ৩১ অক্টোবর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) আদালত এ আদেশ জারি করেন।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিয়ে করেছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটার নাসির হোসেন। এবার সেই বিয়ে নিয়ে বিপাকে পড়লেন তিনি। অভিযোগ ছিল, তার স্ত্রী তামিমা নথি জাল করে নাসিরকে বিয়ে করেছেন। এবার পুলিশি তদন্তে সেই অভিযোগ প্রমাণিত হলো। আদালত নির্দেশ দিলে নাসির ও তামিমাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগশনের তদন্তে উঠে এসেছে, আগের স্বামী রাকিব হাসানের সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদ না করেই বাংলাদেশের ক্রিকেটারের সঙ্গে বিয়ে করে ফেলেছেন তামিমা। এ ঘটনায় নাসির, তামিমা-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারে প্রশাসন।

এর আগে, ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা তাম্মীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন জানিয়েছেন মামলার বাদী রাকিব হাসান। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসীমের আদালতে তিনি এ আবেদন করেন। রাকিবের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পড়ুন: নাসির-তামিমার বিয়ে অবৈধ: পিবিআই

এদিকে প্রথম স্বামীকে রেখে স্ত্রীর দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়ে মুসলিম পারিবারিক আইন বলছে, প্রথম স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাবস্থায় স্ত্রী যদি পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, তাহলে সেই দ্বিতীয় বিয়ে অবৈধ, অকার্যকর ও বাতিল বলে গণ্য হবে। স্ত্রী দ্বিতীয় বিয়ে করতে ইচ্ছুক হলে তাকে আবশ্যিকভাবে আগে প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করতে হবে।

১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ অনুসারে, প্রথম স্বামীকে তালাকের নোটিশ প্রদানপূর্বক ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হওয়া সাপেক্ষে নির্দিষ্ট ইদ্দত পালন শেষে দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণ করা যেতে পারে। এই বিধান লঙ্ঘন করে প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিয়ে বলবৎ থাকাবস্থায় স্ত্রী যদি স্বামীর জিম্মা থেকে পালিয়ে গিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করেন, সেক্ষেত্রে প্রথম স্বামী সেই স্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে পারেন। িসেক্ষেত্রে অভিযুক্ত স্ত্রী বাংলাদেশের ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড পেতে পারেন। সঙ্গে অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।

তবে দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারার এই বিধানের ব্যতিক্রম হতে পারে, যদি সেই স্ত্রী তার পূর্বের স্বামীর সাত বছর যাবত কোনো খোঁজ-খবর না পান, অথবা তিনি জীবিত থাকতে পারেন এমন কোনো তথ্য যদি জানা না যায়, তাহলে পরবর্তী স্বামীকে আসল ঘটনা জানিয়ে তার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারেন। অর্থাৎ এই ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে স্ত্রীর দ্বিতীয় বিয়ে শাস্তিযোগ্য হবে না।

ফলে তামিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বাংলাদেশের ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী তার সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। সঙ্গে অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হতে পারেন তিনি।

তদন্ত প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় রাকিব জানান, তার অভিযোগ শক্তভাবে প্রমাণিত হয়েছে। সত্যিটা সামনে আনার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিআইবি) কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান তিনি। এসময় তিনি জানান, তামিমা এখনও আইনত আমার স্ত্রী। সে যদি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কন্টিনিউ করতে চায় তাহলে আমিও তাই করবো।
 
তামিমা যদি ফিরে আসতে চায় তাহলে কী করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে রাকিব বলেন, যেহেতু আইনগতভাবে সে এখনও পর্যন্ত আমার স্ত্রী। তাই তামিমা যদি ফিরে আসতে চাই আমি অবশ্যই তাকে গ্রহণ করব।