১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৭:২৪

প্রতিবন্ধী না হয়েও নিয়মিত ভাতা তোলেন ছাত্রলীগ নেতা

মাইদুল ইসলাম সরকার বাবু  © সংগহীত

শারীরিক কোনো সমস্যা নেই। অসচ্ছলও নন। তবুও প্রতিবন্ধী ভাতা তোলেন লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইদুল ইসলাম সরকার বাবু (৩০)। সম্প্রতি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া চালু করলে সবার সামনে আসে বিষয়টি।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইদুল ইসলাম দিব্যি দামি মোটরসাইকেল নিয়ে চলাফেরা করেন। সব সময় পরেন দামি পোশাক। এমন সুস্থ মানুষ কীভাবে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে ভাতা তোলেন সেটাই এখন সবার প্রশ্ন।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের আদিতমারী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মাইদুল ইসলাম সরকারের নামে ইস্যু করা বইয়ের নম্বর ৭৯৬। সোনালী ব্যাংক আদিতমারী শাখায় তাঁর সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর ৫২০১৯০১০১৯৬০৯। ওই ৭৯৬ নম্বর বইয়ের বিপরীতে মাইদুল ইসলাম সরকার দুই দফায় সর্বমোট ১১ হাজার ২৫০ টাকা উত্তোলন করেছেন।

জানা যায়, মাইদুল ইসলাম সরকার বাবু আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের বসিনটারী গ্রামের নজরুল ইসলাম সরকারের ছেলে। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে মাইদুল ইসলাম বাবু মেজ। তিনি ২০১৬ সালে রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর করেন। ২০১৯ সালে বিয়ে করেন এবং বর্তমানে এক কন্যাসন্তানের জনক। রাজনীতির পাশাপাশি ব্যবসাও করেন মাইদুল। সবশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন তিনি। ২০১৮ সালে আদিতমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ওই কমিটির দায়িত্ব পালন করছেন।

সোনালী ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর মাইদুলের অ্যাকাউন্টে ৯ হাজার টাকা অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা হিসেবে জমা হয়। এই টাকা তিনি ওই বছরের ২০ অক্টোবর উত্তোলন করেন। এরপর দ্বিতীয় দফায় গত ১৫ মার্চ একই খাত থেকে ভাতা হিসেবে আরও ২ হাজার ২৫০ টাকা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসেবে জমা হয়। এই টাকা তিনি উত্তোলন করেন গত ২৩ মার্চ।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মাইদুল ইসলাম সরকার বাবু বলেন, ‘২০১৮ সালে আদিতমারীতে আমার ওপর প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা করে। এতে আমি গুরুতর আহত হই। আমার ডান হাতের একটা আঙুলে বিকলঙ্গতা দেখা দেয়। চিকিৎসকের প্রত্যয়নও আছে। তারপর থেকে আমি প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণ জরিপ ফরম সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিই। পরে প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা উত্তোলন করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমি সম্পূর্ণ সুস্থ। প্রতিবন্ধী ভাতার সমুদয় টাকা ফেরত দিতে চাই। এ বিষয়টি আমি আদিতমারী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রওশন আলী মণ্ডলকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি।’