পিসাইকেলের উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা অভিযান
‘আন্তর্জাতিক পরিচ্ছন্নতা দিবস-২০২১’ উদযাপন উপলক্ষে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও জনসচেতনতা কর্মসূচি পালন করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন পিসাইকেল। সংগঠনটির সদস্যরা লেকের বিভিন্ন অংশে পড়ে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করা, ডাস্টবিন স্থাপন করা, প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার, মানুষকে সচেতন করতে বিভিন্ন স্টিকার বিতরণসহ বিভিন্ন কাজ করে।
শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর ধানমন্ডি লেকের বিভিন্ন অংশে কার্যক্রম পরিচালনা করে সংগঠনটি।
আয়োজকরা বলেন, আবর্জনার অব্যবস্থাপনাই আমাদের শহরগুলোকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলেছে। আমরা যেখানে সেখানে ময়লা ফেলি কিন্তু এর ভবিষ্যত প্রভাব নিয়ে চিন্তা করি না। যার ফলে এসব ময়লা আবর্জনা ড্রেণে পড়ে পানির লাইন আটকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় বেশিরভাগ সময় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। পিসাইকেল এই সমস্যার সমাধানে মানুষের মাঝে সচেতনতার কাজ করে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক পরিচ্ছন্নতা দিবস উপলক্ষ্যে পিসাইকেল স্বেচ্ছাসেবী উৎসাহী তরুণ তরুণীদের অংশগ্রহণে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। যেখানে অপচয়যোগ্য বর্জ্য আলাদা করণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, দূষণ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা এবং স্থানীয় পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের হাতে হ্যান্ড গ্লাভস বিতরণ করা হয়েছে।
তারা আরও বলেন, সাধারণ মানুষজনও অনেকেই বর্জ্য দূষণের ফলে সমস্যার অভিজ্ঞতা জানিয়ে নিজেরাও সরাসরি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান এ অংশগ্রহণ করে।
সংগঠনটির টিম লিড মেহেদী হাসান বাপ্পি বলেন, এই কার্যক্রম এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা না ফেলতে আমরা উৎসাহিত করেছি। বেশকিছু ডাস্টবিনও স্থাপন করা হয়েছে। আমরা যদি ধীরে ধীরে আমাদের পূর্বের অভ্যাসগুলো পরিবর্তন করি তাহলে অবশ্যই একসময় পরিবেশের সৌন্দর্য ফিরে আসবে।
পারিবারিকভাবে ছোট থেকেই শিশুদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক ধারণা দিলে এটি ভবিষ্যতে সুন্দর পরিবেশ স্থাপনে বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন সংগঠনটির সদস্য ইরতিজা তাহা। তিনি বলেন, যদি আমরা আমাদের জীবনের শিকড় থেকে এই পরিচ্ছন্নতার অভ্যাসকে অন্তর্ভুক্ত করি, তাহলে বর্জ্য দূষণের সমস্যা অনেকাংশ কমে যাবে। আমাদের বাসস্থান অনেক বেশি পরিচ্ছন্ন হবে এবং জীবনযাপনের যোগ্য হবে। পরিষ্কার -পরিচ্ছন্নতার এই জ্ঞান এবং শিক্ষার সাথে জড়িত হওয়া উচিত। ছোটবেলা থেকেই বাচ্চারা যেন এর সাথে পরিচিত হতে পারে সেজন্য প্রাথমিক স্কুল গুলোতে শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থাও করা যেতে পারে।
এছাড়াও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে স্থানীয় পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের উন্নত প্রশিক্ষণের আওতায় আনার প্রতি জোর দিতে হবে বলে জানান পিসাইকেলের সোশ্যাল মিডিয়া এক্সিকিউটিভ রবিউল ইসলাম এর পিসাইকেলের ক্যাম্পেইন এক্সিকিউটিভ ফারহানা নেলি। তারা বলেন, যদিও স্থানীয় পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা নিয়মিত জনবহুল স্থানগুলো পরিষ্কার করে কিন্তু তারপরও সাধারণ মানুষের সহযোগিতা ছাড়া পরিবেশকে বর্জ্যমুক্ত করাটা অসম্ভব। উন্নত দেশগুলোতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সরকার থেকে যে ধরনের সহযোগিতা পায় আমাদের দেশে অনেকটাই অপ্রতুল। তাই পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সমস্যা সমূহ চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধান করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে উদ্যোগী উচিত বলেন মনে করেন তারা।