১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:২৬

অনেক শিক্ষকের নাম ভুলে গেছে শিক্ষার্থীরা

আবারও শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে দেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা  © সংগহীত

গভ মুসলিম হাই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফায়জান মোল্লা দীর্ঘদিন পর স্কুলে এসে শিক্ষকদের চেহারা দেখে চিনতে পারলেও ভুলে গেছেন অধিকাংশ শিক্ষকের নাম। সহপাঠীদের নামও ভুলে গেছে সে। বিশেষ করে নতুন যারা ভর্তি হয়েছে তাদের চিনতেই পারছে না ফায়জান। দীর্ঘ দেড় বছর পর স্কুলে এসে ফায়জান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে এসব কথাই বলেছে।

মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ ৫৪৪ দিন বন্ধ ছিলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সরাসরি ছিলো না কোন যোগাযোগ। অনলাইনে মাধ্যমে ক্লাস অথবা অ্যাসাইনমেন্ট এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল সকল কার্যক্রম।

কিন্তু বর্তমানে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসায় রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে খুলেছে স্কুল-কলেজ। আবারও শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে দেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা।

দীর্ঘ ৫৪৪ দিন শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থীদের সরাসরি কোন যোগাযোগ না থাকায় অনেক শিক্ষার্থীই চিনতে পারছে তাদের শিক্ষককে। এতে বেশী বিড়ম্বনায় পড়েছে ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস টু এবং ফাইভ থেকে সিক্সে অটোপ্রমোশন পাওয়া শিক্ষার্থীরা।

পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সিয়াম ও মাহবুব। তাদের দীর্ঘ ৫৪৪ দিন পর দেখা। স্কুলের একপাশে তাদের গল্প করতে দেখা যায়। শিক্ষকদের চিনতে তাদের কোন অসুবিধা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তারা জানায়, কিছু কিছু শিক্ষকদের দেখলেই চিনতে পারছি। কিন্তু অনেক শিক্ষক আছেন যাদের আমরা চিনতে আমাদের কষ্ট হচ্ছে। বেশী সমস্যা হচ্ছে মাস্ক পরে থাকার কারণে।

দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহজাবিন মৃদুলা বলেন, অনেকদিন পরে স্কুলে এসেছি। সবাইকেই নতুন মনে হচ্ছে। শিক্ষকদেরও নতুন নতুন মনে হচ্ছে।

পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুলের শিক্ষিকা খালেদা আক্তার তানিয়া বলেন, যারা স্কুলে নতুন ভর্তি হয়েছিলো শুধুমাত্র তাদেরই শিক্ষিকদের চিনতে সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু যারা পুরাতন শিক্ষার্থী তারা সকল শিক্ষকদেরকেই চিনতে পেরেছে।

কয়েকজন অভিভাবক জানায়, দীর্ঘদিন বাচ্চারা স্কুল থেকে বিছিন্ন ছিলো। ফলে শিক্ষকদের চিনতে না পারাটা অস্বাভাবিক কিছু না। আর এই সমস্যা মূলত প্রথম, দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বেশী হচ্ছে। কারণ তারা বয়সে ছোট। আবার দীর্ঘ দিন তারা স্কুল থেকে বিছিন্ন ছিলো।

পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষিকা চৈতি রায় টুসি বলেন, আমার মনে হয় না কেউ শিক্ষকদের চিনতে ভুল করেছে। কারণ সকলেই শ্রেণিতে প্রথমেই আমরা আমাদের পরিচয় দিয়েছি। শিক্ষার্থীদের পরিচয় নিয়েছি। কিছুক্ষন শিক্ষার্থীদের সাথে কুশল বিনিময় করেছি। আমরা আশা করছি কিছুদিন এভাবে ক্লাস পরিচালনা করলেই শিক্ষার্থী মানসিকভাবে আবার স্কুলের সাথে সহজেই খাপখাইয়ে নিতে সক্ষম হবে।