বন্যাকবলিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদানে অনিশ্চয়তা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:০৯ AM , আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০৯ PM
করোনার কারণে দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পর আগামী ১২ সেপ্টেম্বর খুলছে দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। তবে বন্যার কারণে সারাদেশে কয়েক হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে গেছে। এরই সাথে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফেরা নিয়ে।
টাঙ্গাইল জেলা
বন্যার কারণে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ১৪৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই উপজেলার বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে পানি উঠেছে। এর মধ্যে উপজেলার পাঁচটি পাহাড়ি ইউনিয়ন আজচগানা, লতিফপুর, তরফপুর, বাঁশতৈল ও গোড়াই বাদে নিম্নাঞ্চলের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি ঢুকেছে। কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে ও রাস্তায় আবার কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরেও পানি ঢোকার উপক্রম হয়ে পড়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিস ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নে ১৭০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫৫টি মাধ্যমিক, আটটি কলেজ, ১৪টি মাদরাসা এবং তিনটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এ ছাড়া ৮৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে পানি আছে বলে উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানিয়েছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ বলেন, সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে উপজেলার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জামালপুর জেলা
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বন্যায় ৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ। বন্যার পানির কারনে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদানের অনিশ্চয়তায় ভুগছে কর্তৃপক্ষ। এদের মধ্যে রয়েছে ২৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪টি মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদরাসা রয়েছে ২টি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল হালিম জানান, উপজেলায় এখন পর্যন্ত ২৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। ১২ তারিখ থেকে বিদ্যালয় খোলা হবে। সরকার এসব বন্যাকবলিত এলাকার জন্য কোন ঘোষণা না দিলে আমরা তো ব্যবস্থা নিতে পারি না। আপাদত পানি না নামা পর্যন্ত শ্রেণীকক্ষে পাঠদান বন্ধ থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
শরীয়তপুর জেলা
অন্যদিকে শরীয়তপুরে ৫৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি অনিশ্চয়তায় রয়েছেন অভিভাবকরা। জেলার নড়িয়া উপজেলায় ২২টি, জাজিরায় ১৯টি ও ভেদরগঞ্জ চারটিতে স্কুলের মাঠে পানি উঠেছে আর আটটি শিক্ষপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করেছে।
নড়িয়া-জাজিরা সড়কে পানি উঠে পড়ায় যানবাহন চলাচলে পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। নড়িয়া উপজেলার রাজনগর, মুক্তাকারেরসহ নড়িয়া, জাজিরা উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। কৃষকরা গরু-ছাগল নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। দিশাহারা হয়ে পড়েছে ভাঙনকবলিতরা। ভাঙন ঠেকাতে বালুভর্তি জিওব্যাগ ও জিওটিউব ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
রাজবাড়ী জেলা
এদিকে রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বন্যার পানিতে তলিয়ে রয়েছে অন্তত ২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব বিদ্যালয় নির্ধারিত সময়ে কীভাবে খুলবে তা নিয়ে শঙ্কিত বিদ্যালয়সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৪১৯টির মধ্যে ২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ঢুকেছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৪টি, পাংশায় ৩টি, গোয়ালন্দ উপজেলায় ৯টি এবং কালুখালী উপজেলায় ৫টি বিদ্যালয় রয়েছে।
সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের ৬ নম্বর কাঠুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পদ্মা নদী থেকে মাত্র ২০ ফুট দূরে অবস্থিত। দোতলা ভবনটিতে গিয়ে দেখা যায়, এর চারপাশে হাঁটুপানি। এর মধ্যে ভবনের নিচতলা বন্যার্তদের জন্য সাইক্লোন শেল্টার হিসেবে খুলে রাখা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে ইয়াসমীন করিম জানান, আগামী এক সপ্তাহ অপেক্ষা করা হবে। এর মধ্যে বন্যার পানি নেমে গেলে ক্লাস শুরু হবে।