০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৩৮

৩ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সংশয়

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে পাবনার চাটমোহরের বনমালী নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়  © সংগৃহীত

করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলছে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। সরকারের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা আসার পর এসব প্রতিষ্ঠানে চলছে ধোয়ামোছার কাজ। আর শিক্ষকরা নিচ্ছেন পাঠদানের প্রস্তুতি।

তবে উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ১৩ জেলায় বন্যা দেখা দেওয়ায় সেখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এছাড়া অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান চালেঞ্জের মুখে পড়েছে। 

পাবনার চাটমোহরের ২২০টি প্রাথমিক এবং ৮৭টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে। ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পানি না কমলে এসব প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু করা সম্ভব হবে না।

শাহজাদপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ২৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এখানকার ৮৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ পানিতে ডুবে গেছে। চৌহালীতে যমুনা নদীর ক্রমাগত ভাঙনে গত দেড় বছরে প্রায় ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়েছে। এর মধ্যে গত দুই সপ্তাহে ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় গ্রাস করেছে যমুনা নদী। ২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।

নাটোরের সিংড়া উপজেলার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে। যাতায়াতের রাস্তা ও খেলাধুলার মাঠ ডুবে রয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পানি না কমলে ওইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোলা সম্ভব হবে না।

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাঠদানের উপযোগী করতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। তবে সেখানকার কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে। রৌমারীতে ৪টি স্কুল নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বন্যার পানি উঠেছে ২৩টি প্রাথমিক ও ৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীতে বিলীন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে। সম্প্রতি বন্যায় ২৮টি সরকারি প্রাথমিক ও দুটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে। মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা আশা করছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বন্যার পানি নেমে যাবে। তা না হলে পরিচালনা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে পাশের উঁচু জমি বা ভবনে ক্লাস নেওয়া হবে।

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ৯ প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১টি হাইস্কুলে বন্যার পানি উঠেছে। এ কারণে বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বন্যার পানি ওঠায় রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চরের চকরাজাপুর ইউনিয়নের ১১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তবে স্কুল খোলার খবরে উচ্ছ্বসিত উপজেলার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় ৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পদ্মার ভাঙনের মুখে রয়েছে। ব্লক, জিওব্যাগ ও বালুর বস্তা ফেলেও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। যে কোনো সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।