শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার বাড়বে
দীর্ঘ প্রায় ১৮ মাস পর দেশের বন্ধ থাকা স্কুল-কলেজ খুলতে যাচ্ছে। এতে করে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে স্বস্তি দেখা দিলেও শিক্ষার্থী ঝরে পড়া নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। বিভিন্ন সংস্থার করা জরিপে সেটি প্রকাশ পেয়েছে প্রবলভাবে।
দেড় বছরেরও বেশি সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষাগ্রহণ থেকে দূরে সড়ে গেছে অনেক ছাত্র-ছাত্রী। শিশুশ্রমে জড়িয়ে গেছে অনেকে। অনেক ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছেন। সব মিলিয়ে ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি হবে বলে মনে করছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। এই শিক্ষার্থীরা আর কখনো শিক্ষার আলো দেখবে না বলে অভিমত তাদের।
শিক্ষা নিয়ে কাজ করা একটি বেসরকারি সংস্থার করা জরিপের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৮ শতাংশ শিক্ষতের মতে বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পর ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি কমে যাবে। আর মাধ্যমিক স্কুলের ৪১.২ শতাংশ শিক্ষক মনে করেন স্কুল খোলার পর শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির হার বাড়বে। ৪৭ শতাংশ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা মতে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির হার বাড়বে, ৩৩.৩ শতাংশ মতে ঝরে পড়া বাড়বে। আর ৬৪ শতাংশ এনজিও কর্মকর্তার মতে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির হার ও ঝরে পড়া বাড়বে।
এ প্রসঙ্গে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধূরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মধ্যে যে অনস্থা তৈরি হয়েছে সেটি দূর করতে হবে। এছাড়া শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধ করতে সরকারের একটা প্রণোদনা দেওয়া দরকার। শিক্ষার্থী যেন ঝরে না পড়ে সেজন্য সরকারকে বড় ধরনের পদক্ষে নিতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হচ্ছে। স্কুল-কলেজ খোলার পর কি কি করতে হবে সে সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ করতেও নানা পরিকল্পনা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধ করতে আমরা করোনার সময়েও শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দিচ্ছি। বৃত্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে একটা শর্তই আছে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাসে আসা। তাই স্কুল খোলার পর কোনো শিক্ষার্থী না এলে আমরা সহজেই বের করতে পারব। এ ছাড়া প্রত্যেক স্কুল থেকেই তার সব শিক্ষার্থীকে ক্লোজ মনিটরিং করা হবে। নিয়মিত এসংক্রান্ত রিপোর্ট আমাদের পাঠাতে হবে। ফলে আমরা ঝরে পড়ার কারণ খুঁজে বের করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারব।’