শূন্যে নেমে এসেছে ছাত্রদলের নারী নেতৃত্ব
উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগের তুলনায় যেমন নারী শিক্ষার্থী বেড়েছে; তেমনি ছাত্র রাজনীতিতেও বেড়েছে নারীর অংশগ্রহণ। তবে এক্ষেত্রে ভিন্ন ছাত্রদল। দেশের অন্যতম বৃহৎ এ ছাত্রসংগঠনটিতে নারীদের অংশগ্রহণ এখন নেই বললেই চলে। শিক্ষাক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীর অংশগ্রহণ সমান তালে এগিয়ে চললেও জাতীয়তাবাদী এ ছাত্র সংগঠনটিতে সুবিধাজনক অবস্থান তৈরির সুযোগ কমে যাওয়ায় নারী নেতৃত্ব নিয়ে তৈরি হয়েছে এক ধরনের অনিশ্চয়তা।
সংগঠনসূত্রে জানা গেছে, ছাত্রদলের ৬০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে নারী রয়েছেন মাত্র দু’জন, যা তিন শতাংশের মতো। সংগঠনটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট হিসেবে বিবেচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) পাঁচটি ছাত্রী হলের একটিতেও কমিটি নেই।
এদিকে দীর্ঘ ২৭ বছর বাদে ২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংগঠনটিতে সরাসরি ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ফজলুর রহমান খোকন ও ইকবাল হোসেন শ্যামল। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি ১৫১ সদস্যের হলেও কাউন্সিলের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করার সে বছরের প্রায় ২ মাস পর ৬০ সদস্য বিশিষ্ট একটি আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, যে কমিটির মেয়াদ দুই বছর। সে হিসেবে তাদের মেয়াদ শেষ হতে এক মাসেরও কম সময় বাকি আছে যা এই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ার কথা। গত প্রায় দুই বছরে তারা পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করতে পারেনি।
ছাত্রদলের অনেকেই বলেছেন, তাদের সাংগাঠনিক প্রক্রিয়া গতি পাচ্ছে না। সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হয়েছে। কোনো পদেই তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারেনি। নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে অন্য কোন রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন নয়, বরং অরাজনৈতিক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন।
নারী শিক্ষার্থীদের ছাত্রদলের প্রতি কেন এই অনীহা এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, বিরোধী রাজনৈতিক সংগঠন হওয়ায় মেয়েরা সরকারের পক্ষ থেকে দায়ের করা মিথ্যা মামলার ভয় পায়। রাজনৈতিক অবস্থানের বিবেচনায় মেয়ে শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলের রাজনীতির প্রতি আগ্রহ কিছুটা কম বলে মনে করছেন তিনি।
এছাড়া ছাত্রদলের সারা দেশে প্রায় ১৪৫টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে মাত্র ৪২টি জেলায় কমিটি গঠন করতে পেরেছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল। যার মধ্যে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ রয়েছে যেগুলো জেলার সমতুল্য। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, জেলাসমূহের শতাধিক ইউনিটের কমিটিই মেয়াদোত্তীর্ণ।