ভিন্ন উদ্দেশ্যে পরিচালিত অনলাইন পোর্টালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে
- বললেন তথ্যমন্ত্রী
- প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২১, ০৯:০৮ PM , আপডেট: ২৪ আগস্ট ২০২১, ০৯:৩৬ PM
অনলাইন গণমাধ্যমকে আজকের পৃথিবীর বাস্তবতা হিসেবে বর্ণনা করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যথেচ্ছভাবে নয়, তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে তবেই অনলাইন গণমাধ্যমের রেজিস্ট্রেশন দেয়া হচ্ছে। একইসাথে যেসমস্ত অনলাইন পোর্টাল সংবাদ ছাড়া ভিন্ন উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়, এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত ‘সাংবাদিকতায় বঙ্গবন্ধু’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রাষ্ট্র, গণতন্ত্র ও সমাজের বহুমাত্রিক বিকাশের স্বার্থে গণমাধ্যমের প্রসার ও স্বাধীনতা যেমন প্রয়োজন, একইসাথে সাংবাদিকতা এবং গণমাধ্যমের নীতি-নৈতিকতাও আবশ্যক। তা না হলে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, রাষ্ট্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রসারের সাথে নীতি-নৈতিকতা থাকলেই কেবল গণমাধ্যমের উদ্দেশ্য সফল হবে।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, যে সমস্ত পত্রপত্রিকা প্রকাশ হয় না, সেগুলোর ডিক্লারেশন রাখার যৌক্তিকতা নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন দেখা দেয়। এগুলো ভূতুড়ে পত্রিকা। এখানে নিয়োগকৃতদের বেতন দেওয়া হয় না, এরা চাঁদাবাজিসহ নানা কিছুতে লিপ্ত হয় এবং সেই বদনামটা সাংবাদিক সমাজের ওপর বর্তায়, যা কখনোই সমীচীন নয়। এজন্য আমরা ভূতুড়ে পত্রিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া শুরু করেছি।
আরও পড়ুন: টিকা কার্যক্রম দেখে পহেলা অক্টোবর খুলবে ঢাবির হল
অনলাইন গণমাধ্যমকে মন্ত্রী আজকের পৃথিবীর বাস্তবতা হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘যথেচ্ছভাবে নয়, তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে তবেই অনলাইন গণমাধ্যমের রেজিস্ট্রেশন দেয়া হচ্ছে। একইসাথে যেসমস্ত অনলাইন পোর্টাল সংবাদ ছাড়া ভিন্ন উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়, এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। একইসাথে আইপি টিভির জন্য ছয়শ’ আবেদন পড়েছে। একটি মামলার প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের একজন বিচারপতিও মন্তব্য করেছেন, যা রায়ের অংশ। এক্ষেত্রটিও আমরা সর্তকতার সাথে দেখছি। মন্ত্রিসভায় পাস করা নীতিমালা অনুযায়ী আইপি টিভি কোনো সংবাদ প্রচার করতে পারবে না। খুব সহসা আইপি টিভি’র রেজিস্ট্রেশন দেয়ার পাশাপাশি ব্যবস্থাও নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন: এবার ইভ্যালির বিরুদ্ধে থানায় জিডি
‘সাংবাদিকতায় বঙ্গবন্ধু’ প্রসঙ্গে ড. হাছান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন সাংবাদিকবান্ধব নেতা ছিলেন। তখন যারা সাংবাদিক ছিলেন তারা বঙ্গবন্ধুকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন। সেই কারণে বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও বাঙালির জন্য তার চিন্তা জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া সহজ হয়েছিল। স্বাধীন হওয়ার পর দেশে একটি বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল। বাসন্তী নামের একজন নারীকে শাড়ির চেয়ে বেশি দামের জাল পরিয়ে ছবি ছাপানোসহ কিছু পত্রপত্রিকায় ক্রমাগত অপপ্রচার চালানো হচ্ছিল। পরে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে আসার পর সেই বাসন্তীর সাথে দেখে করেছেন, তার ঘরও পাকা করে দিয়েছেন। স্বাধীনতা উত্তর সে অবস্থায় বাকশাল প্রতিষ্ঠার পর পত্রপত্রিকার সংখ্যা নির্ধারণের জন্য বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের নিয়ে একটি কমিটি করে দিয়েছিলেন যেখানে ছিলেন মিজানুর রহমান, অধ্যাপক খালেদ, আনিসুজ্জামান খান, গিয়াস কামাল চৌধুরী, আমানুল্লাহ খান, আব্দুল গণি হাজারী, শুধুমাত্র সলিমুজ্জামান ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব। এর বাইরেও সাংবাদিক এনায়েতুল্লাহ খানের পরামর্শ নেয়া হয়েছিল। তাদের পরামর্শেই পত্রিকার সংখ্যা সীমিত করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো সাংবাদিক বেকার হননি, বেশিরভাগ চাকুরিচ্যুতদের অন্যত্র চাকুরি দেয়া হয়েিেছল, বাকিরা তথ্য ও বেতার মন্ত্রণালয়ে গিয়ে ভাতা নিয়ে আসতেন।
ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খানের সঞ্চালনায় সভায় ডিবিসি২৪ চ্যানেলের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ডিআরইউ’র সাবেক সভাপতি এম শফিকুল করিম ও সাইফুল ইসলাম সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুকুর আলী শুভ ও রাজু আহমেদ, যুগ্মসম্পাদক আরাফাত দাড়িয়া, নারী বিষয়ক সম্পাদক রীতা নাহার ও সদস্য মোতাহার হোসেন, মানিক লাল ঘোষ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।