২৪ আগস্ট ২০২১, ০৯:৪৬

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরেক দফা বাড়তে পারে!

খালি শ্রেণিকক্ষ  © ফাইল ছবি

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান সাধারণ ছুটি আরেক দফা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার। করোনা সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের বেশি এবং সংশ্লিষ্টদের টিকা দেয়া কার্যক্রম চলমান থাকায় আপাতত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে চায় না শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে সেপ্টেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে পিছিয়ে পড়া পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘সংক্রমণ প্রত্যাশিত হারে নেমে আসার পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের টিকা দেওয়া শেষ হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা আসবে। কেননা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশিত মানদণ্ড বলে দেওয়া আছে। এছাড়া শ্রেণিকক্ষের পাঠদান উন্মুক্ত করতে সবাইকে টিকা দেওয়ার কাজও শেষ করা প্রয়োজন। এ দুটি সন্তোষজনক পর্যায়ে না এলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া সম্ভব হবে না। আমরা অনেক মাস প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছি। সংক্রমণ প্রত্যাশিত হারে নেমে আসতে বা টিকা দেওয়ার কাজ শেষ করতে আর হয়তো ৫-৬ সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। সে পর্যন্ত অপেক্ষা হয়তো কষ্টকর হবে না বলে মনে করি।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে চলমান ছুটি আরও এক মাস বৃদ্ধি করা হতে পারে। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে এ বিষয়ে ঘোষণা দেয়া হতে পারে।

করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি বিদ্যমান। ইতোমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে। বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে দাবি সবচেয়ে বেশি জোরালো। এই পরিস্থিতির মধ্যে গত ১৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত সচিব সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।

জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ব্যাপারে আমরা সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। এখন কেবল সহনীয় পরিবেশ-পরিস্থিতির জন্য অপেক্ষা করছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে বিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে সংক্রমণ প্রত্যাশিত পর্যায়ে না নামলে চলমান ছুটি আরও বাড়ানো হবে।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, করোনা সংক্রমণ পাঁচ শতাংশে নেমে আসার বিষয়টি অনিশ্চিত এবং প্রকৃতির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এ কারণে টিকা দেওয়ার প্রতি বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। গত ৭ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিন লাখ ৬৩ হাজার ২২২ জন শিক্ষক-কর্মচারী আছেন। তাদের মধ্যে দুই লাখ ৭৮ হাজার ৪২৬ জন টিকা নিয়েছেন। বাকি আছেন প্রায় ৮৪ হাজার। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধিত ৩৪ হাজারের বেশি শিক্ষকের মধ্যে ৩০ হাজার টিকা পেয়েছেন। আর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের এক লাখ ৭৯ হাজার ২৬১ শিক্ষার্থী টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। যাদের মধ্যে প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ৭৯ হাজার ৯১৪ জন। আর উভয় ডোজ পেয়েছেন ছয় হাজার ৭২ জন।