আসিফ নজরুলের কক্ষে তালা দেয়া মত প্রকাশের স্বাধীনতায় আঘাত: ইউট্যাব
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে তার অফিস কক্ষে ছাত্রলীগ কর্তৃক তালা ঝুলানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) সংগঠনের এক বিবৃতিতে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, শুধু সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে এবং অবৈধ সরকারের পতন হলে বাংলাদেশেও বিমানবন্দরগুলোর কি ধরনের দৃশ্যের অবতারণা হবে, সে বিষয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার কারণে জনপ্রিয় শিক্ষক ড. আসিফ নজরুলের রুমে তালা লাগিয়েছে ছাত্রলীগ।
তারা বলেন, আসিফ নজরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান। তিনি বাংলাদেশের একজন সুপরিচিত লেখক, মানবাধিকারকর্মী ও বুদ্ধিজীবী। যিনি বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকারের দু:শাসন ও সকল প্রকার অন্যায়-অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকেন। প্রকৃতপক্ষে সরকারের সমালোচনা করায় ছাত্রলীগের অছাত্ররা তাঁর কক্ষে তালা দেওয়ার দুঃসাহস দেখিয়েছে। আমরা মনে করি এটা সংবিধান স্বীকৃত মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর প্রচণ্ড আঘাত।
ইউট্যাবের শিক্ষক নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আমরা অবাক বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করলাম যে, একজন স্বনামধন্য শিক্ষকের রুমে তালা লাগানো হলো আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দলীয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিলোনা এটা দু:খজনক। কেননা এভাবেই শুধু মত প্রকাশের কারণে অতীতে পত্রিকায় কলাম লেখার কারণে ঢাবির মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক মোর্শেদ হাসান খানকেও ছাত্রলীগের দাবির মুখে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং বেআইনী।
ইউট্যাবের শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্পষ্ট বলতে চাই- দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি পরিহার করে ছাত্রলীগের দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ প্রশমন করা দুষ্কর হয়ে পড়বে। এমতাবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের প্রতি আহ্বান থাকবে অবিলম্বে ছাত্রলীগ নামধারী অছাত্র ও দুর্বৃত্তদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
ইউট্যাবের বিবৃতিদাতা শিক্ষকেরা হলেন, অধ্যাপক ড. মো: আব্দুল করিম, অধ্যাপক ড. আশরাফুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান, অধ্যাপক ড. আবদুর রশিদ, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম মজুমদার, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক ড. আল মোজাদ্দেদী আলফেছানী, ড. গোলাম রব্বানী, ইসরাফিল প্রামাণিক রতন, ড. সাব্বির মোস্তফা খান (বুয়েট), অধ্যাপক মো: নূরুল ইসলাম ও ড. মো: কামরুল আহসান (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়), ড. ছবিরুল ইসলাম হাওলাদার (রাবি), রইচ উদ্দিন (জবি), ড. সাজ্জাদ মাহমুদ, ড. শের মাহমুদ (চবি), অধ্যাপক খায়রুল ইসলাম, ইকবাল হোসেন, (শাবিপ্রবি), ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম ও খান মনোয়ারুল ইসলাম (উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়), এসএম আব্দুল আওয়াল সোহাগ (খুবি), অধ্যাপক এসএম আব্দুর রাজ্জাক (রুয়েট), অধ্যাপক তোজাম্মেল ও মো: মতিনুর রহমান (ইবি) প্রমুখ।