১৯ আগস্ট ২০২১, ১১:৩৬

বরিশালের ইউএনও ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন, মার খেয়েছিলেন ছাত্রদল-শিবিরের

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুনিবুর রহমান শোভন  © ছবি : সংগৃহীত

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুনিবুর রহমান শোভন ‘বিএনপি-জামায়াতের’ দোসর বলে  অভিযোগ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের একাংশ। প্রকৃতপক্ষে ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী এবং নেতা ছিলেন তিনি। ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এবং শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক শাখার পদধারী নেতা ছিলেন তিনি। বিএনপি এবং সর্বশেষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ছাত্রদল এবং শিবিরের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের সময় তিনি আহতও হয়েছিলেন। 

বুধবার রাতে দুই দফায় জেলা ছাত্রলীগের ও আওয়ামী লীগের কয়েকশ’ নেতাকর্মী ইউএনও বাসভবনে হামলা চালায়। হামলায় ইউএনওর বাসভবনে থাকা কয়েকজন আনসার সদস্য আহত হন। এসময় পুলিশ এবং ছাত্রলীগের-আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হন। ছাত্রলীগের দাবি, আনসার ও পুলিশ সদস্যদের গুলিতে তাদের অনন্ত ৩০জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ঘটনার রেশ ধরে বরিশালের রাজনীতি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে। বাস চলাচলও বন্ধ রয়েছে।  

প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা উপজেলা পরিষদ এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতার শুভেচ্ছা ব্যানার অপসারণের কাজ শুরু করে। এসময় ইউএনওর কার্যালয় ও সরকারি বাসভবনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরা তাঁদের পরিচয় জানতে চান। এর পর তাঁরা সকালে এসে কাজ করার জন্য বলেন। এসময় সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের বাকবিতণ্ডা হয়। এ তর্ক-বিতর্ক থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত। 

এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের টিপু-বাদশা কমিটির কয়েকজন নেতা জানান, ২০১১-১২ সালে ঢাবি জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সহ- সভাপতি ছিলেন মুনীবুর রহমান শোভন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদকও ছিলেন তিনি। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকাকালে তিনি ছাত্রদলের এবং শিবিরের নেতাকর্মীদের হাতে মারধরেরও শিকার হয়েছিলেন। 

ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক এবং জহুরুল হক হল শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামসুল কবীর রাহাত বলেন, “শোভন ছাত্রলীগের দুর্দিনের নেতা ছিল। অনাকাঙ্খিত ঘটনার সঠিক ভাবে তদন্ত করা হউক।” 

ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য মশিউর রহমান রুবেল তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, “শোভন আমাদের সাথে দুঃসময়ে ছাত্রলীগ করা ছেলে, ছাত্রদলের মার খেয়ে, জেল খেটে পোড় খাওয়া ছাত্রলীগ নেতা। সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের সিনিয়র সহসভাপতি এবং আমাদের সাথের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ছিলো। আগস্ট মাস এখনো শেষ হয়নি, কি এতো জরুরি ছিলো সিটি কর্পোরেশনের ব্যানার নামানোর? মধ্যরাতে একজন ইউএনও এর বাসায় ব্যানার নামাতে যেয়ে পরবর্তীতে তার বাসায় হামলা এসব কিসের ইঙ্গিত? অতিউৎসাহী কারা এই হামলা করেছে? বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার প্রশ্নে আপোষহীন শোভনকে কাজ করতে দিন। অতিউৎসাহী এবং হাইব্রিডদের ষড়যন্ত্রে পরে এই নির্ভীক সৎ অফিসারকে থামিয়ে দেবেন না।”