২০ জুলাই ২০২১, ১১:৪৬

পিকআপ ভ্যানে বাড়ি ফেরা, আড়াই ঘণ্টার পথ ১০ ঘণ্টায়!

এবারের ঈদে মহামারি করোনা ভাইরাস আতঙ্কের পাশাপাশি বেড়েছে যাত্রাপথের সীমাহীন দুর্ভোগ। তবে সব কিছুই যেন তুচ্ছ ঘরেফেরা মানুষের কাছে। আর এতে বেড়েছে ভয়াবহ যানযট। কিছু ক্ষেত্রে যানজটের কারণে আড়াই ঘণ্টার পথ পার হতে সময় লেগেছে ১০ ঘণ্টা। 

সোমবার (১৯ জুলাই) রাত দেড়টার দিকে সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশন এলাকায় যাত্রাবিরতিতে থাকা একটি পিকআপভ্যানে এমনই কয়েকজন জানান তাদের দুর্ভোগের কথা। আর ওই পিকআপভ্যানে গাদাগাদি করে অন্তত ৩০ জন যাত্রী বসেছিলেন। কারও মুখে ছিল না মাস্ক।  

মৌসুমি খাতুন নামে এক গার্মেন্টস কর্মী আশুলিয়ার জামগড়া থেকে আসছিলেন। তিনি বলেন, নীলফামারী জেলার জলঢাকায় তার বাড়ি। সেখানে দরিদ্র বাবা রয়েছেন। তাদের সঙ্গে ঈদ করার জন্যই ছুটে চলেছেন তিনি।

সামিউর রহমান নামে নীলফামারী সদরের বাসিন্দা এক রিকশাচালক বলেন, ঢাকায় সারা বছর রিকশা চালাই। যতই কিছু হোক না কেন বছরে দুই ঈদে দেশের বাড়ি যাবোই।  

পথের দুর্ভোগের বিবরণ দিতে গিয়ে ঘরে ফিরতে থাকা শ্রমজীবী এ মানুষেরা আরও বলেন, তাদের কেউ কেউ আশুলিয়া, আবার কেউ জামগড়া ও বাইপাইল থেকে পিকআপে চড়েছেন। বাসে ভাড়া বেশি হওয়ায় টাকা বাঁচাতে তারা খোলা পিকআপে চেপেই রওনা হয়েছেন। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে রওয়ানা দিয়েছেন। রাত দেড়টার দিকে সিরাজগঞ্জে এসে পৌঁছাতে পেরেছেন। পথে পথে যানজটের কারণে আড়াই ঘণ্টার পথ আসতে ১০ ঘণ্টা সময় লেগেছে। আরও অন্তত দুশো কিলোমিটার পথ পারি দিতে হবে তাদের। পুরো যাত্রাপথে কখনো টানা রোদ আবার কখনো বৃষ্টির স্বাদও পেয়েছে নিম্ন আয়ের এ মানুষগুলো।

দুর্ভোগের বোঝা মাথায় নিয়ে আসা এসব যাত্রীরা বলেন, ঢাকায় কার সঙ্গে ঈদ করবো? ওখানে শুধু কাজের জন্য থাকা। আত্মীয় পরিজন তো সব নিজের নিজের এলাকায়। তাদের ছেড়ে ঈদকে পানসে মনে হয়। তাছাড়া আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে কোরবানি দেওয়ার মজাই আলাদা।  

পিকআপভ্যান চালক শাহীন আলম বলেন, যাত্রীদের মধ্যে সবাই নীলফামারী জেলার বাসিন্দা। এদের  কাছে ৭/৮শ টাকা করে ভাড়া নেওয়া হয়েছে। বাসের ভাড়া ১২শ থেকে ১৫শ টাকা নেওয়া হচ্ছে। সেখানে আমরা ৭/৮শ করে নিচ্ছি। ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব মহাসড়কে তীব্র যানজটের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।  

বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, যানবাহনের প্রচুর চাপ। বাসের পাশাপাশি কিছু ট্রাকেও যাত্রী নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে কোথাও বড় ধরনের যানজট সৃষ্টি হয়নি।