১৭ জুলাই ২০২১, ১০:০৯

শিক্ষকেরা অভাবে পেশা বদলাচ্ছে, তবুও আর্থিক প্রণোদনা পায়নি

  © ফাইল ফটো

নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার মানুষ সরকারি-বেসরকারি পর্যায় থেকে আর্থিক প্রণোদনাও পেয়েছেন। কিন্তু কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক-কর্মচারীদের খবর কেউ রাখেনি। প্রায় ৫০ হাজার কিন্ডারগার্টেনের ছয় লাখ শিক্ষক দেড় বছর ধরে বেতন-বোনাস পাচ্ছেন না। অনেকে পেশা বদল করেও টিকে থাকার সংগ্রামে হিমশিম খাচ্ছেন।

দেশে প্রায় ৫০ হাজার কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ছয় লাখ শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত। টিউশন ফির টাকায় এসব স্কুলের বাড়িভাড়া, নানা ধরনের বিল এবং শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয়।  গত বছরের মার্চ মাস থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। ফলে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকদের বেতন বন্ধ হয়ে গেছে।

এ পরিস্থিতিতে অনেকে বাধ্য হয়েছেন পেশা বদল করতে। এই শিক্ষক-কর্মচারীদের কেউ সবজি বিক্রি করছেন, কেউ দোকানে কর্মচারীর কাজ নিয়েছেন। বেশির ভাগ এরই মধ্যে তাঁদের পরিবার-পরিজনকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তার পরও টিকে থাকার সংগ্রামে হিমশিম খাচ্ছেন।

সরকার দুই দফায় নন-এমপিওর ৮০ হাজার ৭৪৭ জন শিক্ষক ও ২৫ হাজার ৩৮ জন কর্মচারীকে সহায়তা দিয়েছে। দুই দফার প্রতিবার শিক্ষকরা এককালীন পাঁচ হাজার টাকা আর কর্মচারীরা আড়াই হাজার টাকা পেয়েছেন। প্রয়োজনের তুলনায় এই টাকা অপ্রতুল হলেও কিছুটা সহায়ক হয়েছে। সম্প্রতি সরকার নিম্নজীবীদের জন্য প্রণোদনার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। সেখানেও কিন্ডারগার্টেনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।  

বাংলাদেশে কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান এম ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্কুল বন্ধের খবর আসছে। যেসব কিন্ডারগার্টেন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত, তাদের জায়গা কম লাগায় বাড়িভাড়াও কম। কিন্তু যেসব স্কুল এসএসসি বা এইচএসসি পর্যন্ত, তাদের বাড়িভাড়া অনেক বেশি। অনেক শিক্ষক বা পরিচালক আছেন, যাঁরা ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে স্কুল চালাচ্ছেন। তাঁদের তো অন্য পেশায় যাওয়ার উপায় নেই! এত দিন তাঁরা সহায়-সম্বল বিক্রি করে বাড়িভাড়া চালিয়েছেন। এখন আর পারছেন না।

তিনি আরো বলেন, করোনাকালে সরকার আমাদের ছয় লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর কথা একবারও ভাবল না! আমার অনুরোধ, যদি আমাদের ন্যূনতম অবদানও থাকে, তাহলে দ্রুত আমাদের শিক্ষকদের প্রণোদনা দিন, বেঁচে থাকতে তাঁদের সহায়তা করুন। উদ্যোক্তাদের বিনা সুদে বা স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করুন।