ইভ্যালির চেয়ারম্যান ও এমডির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরীন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রাসেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) এই দুজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে দুদক জানিয়েছে।
দুদক বলছে, ইভ্যালির বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের অনুসন্ধানকালে তারা বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছে, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরীন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল গোপনে দেশত্যাগের চেষ্টা চালাচ্ছেন। দুদক মনে করছে, অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায় অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ ত্যাগ করলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হবে। এ কারণে তাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ইভ্যালির বিরুদ্ধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের সূত্র ধরে গত বছরের নভেম্বরে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন। এ লক্ষ্যে দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী ও উপসহকারী পরিচালক শিহাব সালামকে নিয়ে দুই সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়।
প্রাপ্ত অভিযোগের পর্যালোচনা করে দুদক বলছে, এ বছরের ১৪ মার্চ পর্যন্ত ইভ্যালি ডটকম লিমিটেডের চলতি সম্পদের পরিমাণ ৬৫ কোটি ১৭৮ লাখ টাকা। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটির দায় ৪০৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম হিসেবে নেওয়া দায় প্রায় ২১৪ কোটি টাকা। আর মার্চেন্টদের কাছে ইভ্যালির দায় ১৯০ কোটি টাকা। দুদকের হিসাবে স্বাভাবিক নিয়মে ইভ্যালির কাছে ৪০৪ কোটি টাকার সম্পদ থাকার কথা। কিন্তু ইভ্যালির কাছে চলতি সম্পদ রয়েছে মাত্র ৬৫ কোটি ১৮ লাখ টাকার, যা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি তার চলতি দায়ের বিপরীতে মাত্র ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ গ্রাহককে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে।
দুদক বলছে, তদুপরি গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে গৃহীত ৩৩৯ কোটি টাকার কোনো হদিস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এই টাকা সম্পূর্ণভাবে আত্মসাৎ অথবা অন্যত্র সরিয়ে ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনেও প্রতীয়মান হয়েছে।
এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৪ জুলাই দুদককে ইভ্যালির ব্যাপারে অনুসন্ধানের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে ইভ্যালির অগ্রিম নেওয়া ৩৩৯ কোটি টাকার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক পরিদর্শন প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ওই চিঠি দেয়।
নাম প্রকাশে না করার শর্তে দুদকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, ইভ্যালির দীর্ঘদিনের এই কার্যক্রমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কোনো সংস্থার গাফিলতি রয়েছে কি না, তা-ও দুদকের অনুসন্ধানে দেখা হবে।